মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ৫ম ভিসি ড. খন্দকার আক্তার হোসেন
প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫, ১১:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ

বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির পঞ্চম ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন রিয়ার এডমিরাল ড. খন্দকার আক্তার হোসেন।
বুধবার (৭ মে) ভিসি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
রিয়ার এডমিরাল ড. খন্দকার আক্তার হোসেন ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে একজন ক্যাডেট অফিসার হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি একজন চৌকস প্রকৌশলী, নৌ স্থপতি এবং কর্মকর্তা হিসেবে গত ৩৫ বছর যাবৎ দেশ ও বিদেশের সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (BUET) হতে নেভাল আর্কিটেকচার এন্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিশেষ কৃতিত্বের সাথে বিএসসি এবং এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একটি প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া হতে ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট ও Advanced Technology-তে PhD ডিগ্রি লাভ করেন ড. খন্দকার আক্তার হোসেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই থেকে জাহাজ নির্মাণ প্রশিক্ষণ তথা ISMC এর উপর বিশেষ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি BUET থেকেও নেভাল আর্কিটেকচার ও Heavy Industry-তে দ্বিতীয়বার PhD ডিগ্রি অর্জন করেন। BUET থেকে এ বিষয়ে তিনিই প্রথম ও একমাত্র PhD অর্জন করেছেন।
ইঞ্জিনিয়ারিং স্পেশালাইজেশন, পিএসসি, এনডিসি সহ সামরিক বাহিনীর প্রয়োজনীয় সকল কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন তিনি।
ড. খন্দকার আক্তার হোসেন অত্যাধুনিক মিসাইল ফ্রিগেট ও কর্ভেটসহ বিভিন্ন যুদ্ধ জাহাজে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এছাড়াও তিনি নেভাল একাডেমী, মেরিন একাডেমী, এনআইটি, এমআইএসটিতে ইন্সট্রাক্টর/প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি খুলনা শিপইয়ার্ড, চট্টগ্রাম ড্রাই ডক, নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড, উচাং শিপইয়ার্ড এর মত নামকরা শিপইয়ার্ড সমূহে জেনারেল ম্যানেজার (শিপ বিল্ডিং), জেনারেল ম্যানেজার (প্রডাকশন), জেনারেল ম্যানেজার (প্লানিং, ডিজাইন ও কিউসি) ইত্যাদি পদে কর্মরত ছিলেন।
এছাড়াও তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন সুদানে স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অত্যাধুনিক স্বাধীনতা ক্লাস সর্বাধুনিক মিসাইল কর্ভেটের প্রধান প্রকৌশলী, স্থপতি ও নকশাকার হিসেবে নিযুক্ত হয়ে চীন থেকে জাহাজদ্বয় নির্মাণে বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে মেম্বার (ইঞ্জিনিয়ার) হিসেবে দায়িত্ব পালন অবস্থায় বে-টার্মিনাল, মাতারবাড়ি বাণিজ্যিক বন্দর, ISPS কোড বাস্তবায়ন, লয়েডস রেজিস্টার মোতাবেক সর্বাধিক সংখ্যক কন্টেইনার হেন্ডেলিং এর রেকর্ডসহ উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু প্রজেক্ট ও কার্যক্রম সম্পাদন করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লি., খুলনা শিপইয়ার্ড লি., চট্টগ্রাম ড্রাইডক লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত হয়ে প্রতিষ্ঠানসমূহকে লাভজনক শিল্পকারখানায় পরিণত করতে তথা দেশীয় জাহাজ নির্মাণ ও বৃহৎ শিল্পের বিকাশে অবদান রেখেছেন।
তিনি MIST-তে বিভাগীয় প্রধান ও ডিন হিসাবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিএসডি হিসেবে বিএন ডকইয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকালে যুদ্ধজাহাজ সংরক্ষণ, গবেষণা, R&D, CNRD এবং ডকইয়ার্ড টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্বে তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদ সহকারী নৌ প্রধান (ম্যাটেরিয়েল) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (IEB), যুক্তরাজ্যের রয়েল ইনস্টিটিউশন অব ন্যাভাল আর্কিটেক্টস (RINA), এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অফ মেরিন এন্ড শিপিং প্রফেশনালস (IAMSP) একজন সম্মানিত ফেলো। কৃতিত্বপূর্ণ গবেষণা কর্মের ধারাবাহিকতায় তাঁর একশত পঞ্চাশটিরও বেশি গবেষণা প্রবন্ধ স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), ইন্টারনেট অব থিংস (IoT), Block-chain, রোবটিক্স, স্যাটেলাইট যোগাযোগ, ব্লু-ইকোনমি, শিপ রিসাইক্লিং, শিপবিল্ডিং, জ্বালানি সমাধান, কারিগরি শিক্ষা ও কর্মসংস্থান, পোর্ট ম্যানেজমেন্ট এবং উন্নত প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ডা. শরমিন হাসানের সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ। তাদের পরিবারে যমজ কন্যা ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।