তিতুমীর কলেজে ৩ ভবনের নতুন নামকরণ; যা বলছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ১৮:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ

  তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে ৩টি ভবনের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করেছে কলেজ প্রশাসন।

আজ সোমবার (২১ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, কলেজের কলা ভবনকে ‘বিশ্বকবি’, মাস্টার্স ভবনকে ‘পল্লীকবি’ এবং সম্মান ভবনকে ‘বিদ্রোহী কবি’ নামকরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কলেজের ১৮-১৯ সেশনের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মারুফা নাসরিন বলেন, ‘প্রতিটি কলেজের একটি নির্দিষ্ট স্বকীয়তা থাকে, বৈশিষ্ট্য থাকে। আমরা এই নামগুলোর সাথেই শুরু থেকে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এই নামগুলোর প্রচলন রয়েছে। যেখানে সংস্কার দরকার, সেখানে সংস্কারটা হওয়া জরুরি সর্বপ্রথম।’

মাস্টার্স ২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী রাতুল আহমেদ বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের পরিবর্তে ভবন সংস্কার বা আধুনিকীকরণে উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। এই ভবনগুলোর নাম শুধু নাম নয়, এটি আমাদের ইতিহাস, অনুভূতি ও স্মৃতির প্রতীক। ‘কলা ভবন’ যেমন বহু শিক্ষার্থীর একাডেমিক জীবনের সঙ্গে জড়িত, তেমনি ‘সম্মান ভবন’ বা ‘মাস্টার্স ভবন’-এর নাম আমাদের চেনা ও আপন একটি পরিচিতি বহন করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তিতুমীর কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মতামত ও অংশগ্রহণ ছাড়া এই ধরনের পরিবর্তন গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চাই প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক এবং ছাত্রসমাজের আবেগ ও মতামতকে গুরুত্ব দিক।’

২০-২১ বর্ষের ইসলামি ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, ‘এই নাম পরিবর্তনটা আমার কাছে অযৌক্তিক মনে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সব জায়গাতেই এইরকম নাম রয়েছে। সংস্কার করার জন্য অনেক জায়গায়ই আছে কলেজের।’

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের আগে আরও অনেক কিছু আছে যা পরিবর্তন আবশ্যক। আমরা ওইসব পরিবর্তন দেখার আশাবাদী।’

এই বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বিগত সময়ে এই ভবনগুলোর যে নাম ছিলো, সেটা নিয়ে কলেজে আগত বা ভর্তিইচ্ছু নতুন শিক্ষার্থীদের ভবনগুলো চিনতে সমস্যা হতো। মূলত এই কারণেই ভবনগুলোর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আজ থেকে এই ভবনগুলোর নাম কার্যকর হবে।”

তিনি আরও জানান, ‘ভবনগুলো কবিদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। নামগুলো সকলের কাছেই পরিচিত এবং আমি আশাবাদী যে সকলের কাছেই নামগুলো গ্রহণযোগ্য হবে। এই নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হবে না।’

শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক এম এম আতিকুজ্জামান এই বিষয়ে বলেন, ‘এই ভবনগুলোর নামগুলো ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ে নামকরণ করা হয়েছিলো। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, কলা ভবনে শুধু আর্টস ফ্যাকাল্টিই নয়, অন্য ফ্যাকাল্টিও আছে। মাস্টার্স ভবনে শুধু মাস্টার্স না, অনার্সের ক্লাসও হচ্ছে। একারণে দেখা যেতো নতুন শিক্ষার্থীদের সমস্যা হতো। তাই শিক্ষকদের সম্মিলিত মতামতে নামগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে।’

তিনি প্রত্যাশা করেন, ‘এই নামকরণগুলোতে কারো দ্বিমত থাকবে না। সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।’