প্রাথমিক বৃত্তিতে বৈষম্যের অভিযোগ, মন্ত্রণালয়ের জবাব

প্রকাশ : ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা’ বৈষম্যমূলক, এমন অভিযোগ সঠিক নয় বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ইনফরমেশন অফিসার আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ’ কর্তৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত বক্তব্যের প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই একটি, শুধুমাত্র ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা’। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশের শিক্ষা জরিপগুলিতে দেখা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত পরিবারের। পক্ষান্তরে, কিন্ডারগার্টেনে অধ্যয়নরত বেশিরভাগ শিক্ষার্থী তুলনামূলকভাবে স্বচ্ছল পরিবারের। ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা’ এই নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর সন্তানদের শিক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে একটি আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে।

উল্লেখ্য, কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ২য় থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য 'কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন বৃত্তি পরীক্ষা' চালু রেখেছে, যেখানে শুধুমাত্র কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীরাই অংশ নিতে পারে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায় না। ফলে তাদের অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে বৃত্তি পরীক্ষা চালুর দাবি ওঠে।
 
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭(ক) অনুচ্ছেদ এবং বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন, ১৯৯০ অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী সকল শিশুর অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ নীতি কার্যকর নেই। যারা নিজেদের সন্তানদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়ান, তারা স্বেচ্ছায় তা করেন। এসব বিবেচনায় ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা’ বৈষম্যমূলক, এমন অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা, বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী সকল শিশুর জন্যই উন্মুক্ত। 

এর আগে, গত ২৩ জুলাই সরকারি পরিপত্রের মাধ্যমে দেশের কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত করার প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ। 

জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মো. রেজাউল হক বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শুধু ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিটিআই-সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়’ সরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে মর্মে পরিপত্র জারি করেছে। ফলে কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বেসরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পঞ্চম শ্রেণিতে সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। আমরা এ পরিপত্রকে প্রত্যাখ্যান করছি।