করোনা বদলে দেয় ইবি শিক্ষার্থী নোমানের জীবন
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৩৮ | অনলাইন সংস্করণ
ইবি প্রতিনিধি

করোনা ভাইরাস এক আতঙ্কের নাম। এটি পৃথিবীতে এসেছে কারো জন্য অভিশাপ, আবার কারো জন্য আশীর্বাদের দূত হয়ে। নোমানের জীবনে করোনা ভাইরাস এসেছে আশীর্বাদের আলো হিসেবে। করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে পুরো বিশ্ব হঠাৎ করেই থমকে যায়, সবকিছু যেন উলটপালট হয়ে যায়। সেই সময়ে টিউশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নোমান দুশ্চিন্তায় পড়ে যান, কীভাবে চলবে তার শিক্ষাব্যয়। নানা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতে থাকে তার।
হঠাৎ করেই নোমানের জীবনে আশার আলো হয়ে আসে ‘তাদিলুল উম্মাহ একাডেমি’। ২০২১ সালের প্রথম দিকে তিনি ‘তাদিলুল উম্মাহ একাডেমি’ নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে অনলাইনের মাধ্যমে দেশের বাইরে বসবাসরত প্রবাসীদের সন্তানদের কুরআনসহ বাংলা ও ইংরেজি শেখানো শুরু করেন। প্রথম দিকে সাড়া কম পাওয়া গেলেও দমে যাননি নোমান। দিনরাত চেষ্টা চালিয়ে ২০২২ সালের শেষ দিক থেকে ধীরে ধীরে সাফল্য আসতে শুরু করে। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের মাসিক আয় লাখ টাকারও বেশি।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ছেলে। বর্তমানে ‘তাদিলুল উম্মাহ একাডেমিতে’ প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আরবি, বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষা গ্রহণ করছেন। এ প্রতিষ্ঠানে নোমানসহ ৭ জন শিক্ষক ও শিক্ষিকা এবং একজন আইটি সাপোর্টার কাজ করছেন।
নোমান জানান, ২০১৫ সালে পারিবারিক আর্থিক সংকটের কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। বাবার মাসজিদে ইমামতির বেতন যথেষ্ট ছিল না, সংসার চালানো যেতো না। তখন পরিবার বলেছিল, আর পড়াতে পারবে না, যা পারছ সেটাই করো। সেই সময়ে টিউশন শুরু করেন মাসে ৫০০ টাকায়। ২০১৯ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় ভর্তি হন ঋণ নিয়ে। এরপর নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজকের সফল অবস্থানে পৌঁছেছেন।
তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কখনো ভয় পাবেন না। পৃথিবীতে আমাদের জন্য অনেক বড় সুযোগ রয়েছে, সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। সব শেষ হয়ে গেছে ভাবলে চলবে না। সৃষ্টিকর্তা সবার মাঝে সম্ভাবনা দিয়েছেন। যদি আমরা নিজেকে চেনি এবং চেষ্টা চালাই, ইনশাআল্লাহ সফলতা আসবেই।
নোমানের স্বপ্ন একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন কিছু করা এবং বেকার তরুণদের পাশে দাঁড়ানো। এছাড়া ‘তাদিলুল উম্মাহ একাডেমি’র মাধ্যমে সামাজিক কর্মকাণ্ডও করে যাচ্ছেন তিনি।
