ক্যাম্পাস শাটডাউনের প্রতিবাদে রাবি ছাত্রশিবিরের মানববন্ধন
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:১৩ | অনলাইন সংস্করণ
রাবি প্রতিনিধি

পোষ্য কোটার পুনর্বহালের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর ডাকা কমপ্লিট শাটডাউনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, শাটডাউন কর্মসূচি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে জিম্মি করা হচ্ছে। বহু আগেই নিষ্পত্তি হওয়া পোষ্য কোটা ইস্যু আবার সামনে এনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে একটি ছাত্র সংগঠন তাদের মাদার সংগঠনের সহায়তায় নানা অজুহাত দাঁড় করিয়ে রাকসু নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। মূলত এ ধরনের পদক্ষেপের উদ্দেশ্য শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা এবং দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত নির্বাচন বানচাল করা ছাড়া আর কিছু নয়।
মানববন্ধনে রাকসু’র ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’-এর ভিপি প্রার্থী এবং শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত রাকসু নির্বাচন বানচাল করা ও শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দ্বন্দ্ব সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একটি গোষ্ঠী পোষ্য কোটার মতো মীমাংসিত ইস্যু সামনে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম অচল করে দিয়েছে। কতিপয় শিক্ষক রাজনৈতিক ব্যানারে সক্রিয় হয়ে পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং তাদের উসকানিমূলক বক্তব্যে কর্মকর্তা–কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ করছে।
তিনি আরও বলেন, কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারীর এ ধরনের শাটডাউন কর্মসূচি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তারা শিক্ষার্থীদের বোঝাতে চাইছে, আবারো যদি ক্লাস, পরীক্ষা, লাইব্রেরি ও রাকসু নির্বাচন চালু করতে চাও, তবে অবশ্যই তাদের ‘পোষ্য কোটা’ মেনে নিতে হবে। পাশাপাশি একটি ছাত্র সংগঠন তাদের মাদার সংগঠনের সহায়তায় রাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে।
এদিকে, ‘শিক্ষক লাঞ্ছনার’ বিচার নিশ্চিত ও প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার দাবিতে টানা চতুর্থ দিনের মতো পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তারা। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কর্মসূচি চালাচ্ছেন। এতে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
বুধবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে তারা অবস্থান নেন। গতকাল প্রশাসনের সঙ্গে সভা করেও সমাধান না হওয়ায় আন্দোলন চলমান রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ দ্বিতীয় ব্যক্তি উপ-উপাচার্যকে লাঞ্ছনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর আগেও নামধারী কিছু ছাত্র শিক্ষককে আটকে রেখেছিল। আমরা এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আশ্বাস পাইনি। তাই আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।
অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য আমাদের সঙ্গে বসেছিলেন। কিন্তু তারা আমাদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। আজ আবার বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আপাতত শাটডাউন বহাল আছে। পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
