রাকসু নির্বাচনে ২৩ পদের ২০টিতেই শিবিরের বিজয়
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০০ | অনলাইন সংস্করণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট। ২৩টি পদের মধ্যে ২০টিতেই তারা জয়ী হয়েছেন, যা এক অনন্য ভূমিধ্বস বিজয় হিসেবে ধরা হচ্ছে। শুধু তিনটি পদ—সাধারণ সম্পাদক (জিএস), ক্রীড়া সম্পাদক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক—জোটের হাতছাড়া হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন।
এতে শিবিরের বাইরে জিএস পদে জয়ী হয়েছেন সালাহউদ্দিন আম্মার, যিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এবং ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। ক্রীড়া সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় নারী ফুটবলার ও ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী নার্গিস খাতুন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ তোফা।
ভিপি পদে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে শিবির সমর্থিত সালমান সাব্বির সামান্য ব্যবধানে পরাজিত করেছেন ছাত্রদল সমর্থিত জাহিন বিশ্বাস এষাকে। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদেও শিবির সমর্থিত প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন।
সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে জাহিদ হাসান জ্বোহা, সহকারী সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রাকিবুল ইসলাম, সহকারী ক্রীড়া সম্পাদক পদে আবু সাঈদ নাঈম, নারী বিষয়ক সম্পাদক পদে সাঈদা হাফসা এবং সহকারী নারী বিষয়ক সম্পাদক পদে সামিয়া জান্নাত নির্বাচিত হয়েছেন।
তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে নাজমুস সাকিব, সহকারী পদে সিফাত আবু সালেহ, মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে মুজাহিদুল ইসলাম, সহকারী পদে আসাদুল্লাহ হিল গালিব ও মুজাহিদুল ইসলাম সায়েম নির্বাচিত হয়েছেন। বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন ইমরান লস্কর, সহকারী পদে নয়ন মুরসালিন।
পরিবেশ ও সমাজসেবা সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ আল মাসুদ এবং সহকারী পদে মাসুমা ইসলাম মোমো নির্বাচিত হয়েছেন। কার্যনির্বাহী সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন দ্বীপ, সুজন চন্দ্র, ইমজিয়াউল আলি ও খালিদ হাসান।
নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে মোট ২৩ পদে ২৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। হল সংসদে ১৫ পদে ৫৯৭ জন প্রার্থী এবং সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ৫ পদে ৫৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ভিপি পদে ১৮ জন, জিএস পদে ১৩ জন এবং এজিএস পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৯০১, যার মধ্যে ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ এবং ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬। ভোট পড়েছে ৬৯.৮৩ শতাংশ। ছয়টি নারী হলে ভোট পড়ার হার ৬৩.২৪ শতাংশ ছিল।
নির্বাচন দিনভর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যে সম্পন্ন হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। রাকসুর এ ফলাফল শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, শিক্ষার্থী রাজনীতিতে নতুন প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন।
