রাকসুর জিএস নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মারের জয়

প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪১ | অনলাইন সংস্করণ

দীর্ঘ ৩৪ বছর পর অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত।

অন্যদিকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’-এর প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষে সব কেন্দ্রের ভোট গণনা করে বেসরকারিভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করা হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।

ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, জিএস পদে সালাহউদ্দিন আম্মার পেয়েছেন ১১ হাজার ৫৩৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, শিবির সমর্থিত ফজলে রাব্বি ফাহিম রেজা পেয়েছেন ৫ হাজার ৭২৯ ভোট। দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান দাঁড়ায় ৫ হাজার ৮০৮।

অন্যদিকে ভিপি পদে মোস্তাকুর রহমান জাহিদ পেয়েছেন ১২ হাজার ৬৮৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত শেখ নূর উদ্দীন আবির পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৭ ভোট, ব্যবধান ৯ হাজার ২৯০ ভোট।

সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে শিবির সমর্থিত প্রার্থী সালমান সাব্বির ৬ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত জাহিন বিশ্বাস এষা পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৪১ ভোট।

নির্বাচনে মোট ২৩টি কেন্দ্রীয় পদে ২৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। একই সঙ্গে হল সংসদের ১৫টি পদে ১৭টি হলে ৫৯৭ জন এবং সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫ পদে ৫৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৮ জন, জিএস পদে ১৩ জন এবং এজিএস পদে ১৬ জন প্রার্থী। মোট ভোটার ছিলেন ২৮ হাজার ৯০১ জন, যার মধ্যে ১১ হাজার ৩০৫ জন ছাত্রী এবং ১৭ হাজার ৫৯৬ জন ছাত্র। ভোটের হার দাঁড়িয়েছে ৬৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ছয়টি নারী হলে ভোট পড়েছে ৬৩ দশমিক ২৪ শতাংশ।

দিনভর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মধ্যেও নির্বাচনের পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। দীর্ঘ বিরতির পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে ভোট শেষে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘ তিন দশক পর রাকসু নির্বাচন আয়োজন হওয়ায় এটি গণতান্ত্রিক চর্চার নতুন সূচনা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, পুরো প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হয়ে থাকবে।