রাবির ইতিহাসের নিয়োগ বোর্ড বাতিল চেয়ে লিখিত অভিযোগ
প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ২১:০১ | অনলাইন সংস্করণ
রাবি প্রতিনিধি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে গত বুধবার (৮ অক্টোবর)। এতে নিয়োগ বোর্ডের প্রশ্নে ভুল, পরীক্ষায় আর্থিক অনিয়ম এবং ছাত্রলীগ নেতাদের দুই স্ত্রীর নিয়োগ পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এদিকে নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিয়োগ বোর্ডে অংশ নেওয়া একাধিক প্রার্থী।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দেন তারা।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বরাবরও লিখিত অভিযোগ দেন। এসময় অবৈধ নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবি জানান প্রার্থীরা।
লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রতি অনুষ্ঠিত শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও পক্ষপাতমূলক আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। এসব অনিয়মের কারণে মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার ন্যায্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ভুল, প্রশ্নফাঁস, লিখিত পরীক্ষায় অযোগ্য প্রার্থীদের টিকিয়ে দেওয়া এবং প্রভাবশালী গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপের মতো অভিযোগ উঠেছে। এসব কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কলঙ্কিত করেছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে গভীর হতাশা সৃষ্টি করেছে।
প্রার্থীরা দাবি করেন, উক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়াটি অবিলম্বে বাতিল করে একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও ন্যায্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরায় নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হোক। পাশাপাশি অনিয়মে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তারা। প্রার্থীদের বিশ্বাস, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের প্রার্থী গোলাম রব্বানী বুলবুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় শিক্ষক নিয়োগ যতটা স্বচ্ছ হওয়ার প্রয়োজন ছিল, তার কোনোটিই ছিল না ইতিহাস বিভাগের নিয়োগ বোর্ডে।
লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নে ভুল, বিষয়বহির্ভূত প্রশ্ন, আর্থিক অনিয়ম ও প্রশ্নফাঁসসহ নানা অভিযোগে জর্জরিত এ নিয়োগ বোর্ড। উপাচার্য স্বচ্ছভাবে নিয়োগ দিতে চাইলেও তার আশপাশে থাকা কিছু অসাধু ব্যক্তি তাকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
আরেক প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, লিখিত পরীক্ষায় প্রচণ্ড অনিয়ম হয়েছে এবং চারটি প্রশ্নের মধ্যে দুটিই ভুল ছিল। যেমন, ‘কৃষি বিপ্লবকে প্রতারণা বিপ্লব বলা হয়’—এমন প্রশ্ন ইতিহাসের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ইউভ্যাল নোয়া হারারি তার ‘সেপিয়েন্স’ গ্রন্থে কৃষি বিপ্লবকে প্রতারণা বিপ্লব বলেছেন, যা বিতর্কিত। সেটি কিভাবে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের প্রশ্নে আসে, সেটি আমার বোধগম্য নয়। এমন উদ্ভট প্রশ্ন করে একটি বিশেষ মহলকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে আমি মনে করি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, আমি এ বিষয়ে এখনো কিছু জানি না। তবে তারা যদি আমার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে থাকেন, অবশ্যই বিষয়টি আমি দেখব।
