চুয়েটে জমকালো আয়োজনে ২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপিত

প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ

  চট্টগ্রাম ব্যুরো

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সিনিয়র সচিব জনাব এ এস এম সালেহ আহমেদ বলেছেন, বিশ্ব আজ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যার মধ্যে অন্যতম হলো প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের দ্রুত গতি। এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে আমাদের আরও প্রযুক্তিনির্ভর হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের মাধ্যমেই এই চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব। আপনারা শুধু দক্ষ প্রকৌশলী বা প্রযুক্তিবিদ হিসেবেই নয় বরং সৎ, পেশাদার, দেশপ্রেমিক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবেও দেশের সেবা করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বেলা ১১টায় চুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে গেস্টস অব অনার ছিলেন চুয়েটের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব।

গেস্টস অব অনার-এর বক্তব্যে চুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, বর্তমানে চুয়েট খুব দ্রুত আধুনিকায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে। আমাদের অনেক বাধা রয়েছে, কিন্তু এরপরেও আমরা চুয়েটে আধুনিক গবেষণাগার নির্মাণ ও ডিজিটাল সেবাকে সমুন্নত করছি, যাতে স্মার্ট ক্যাম্পাস গঠনের উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতে চুয়েটকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিনির্মাণ করতে পারি। আমরা এমন এক শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে জ্ঞান, উদ্ভাবন এবং মানবিকতা একসূত্রে গাথা থাকবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, বিশ্ব আজ অভূতপূর্ব গতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিংয়ের যুগে প্রবেশ করেছি। কিন্তু এসব প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হলেও বাস্তব প্রয়োগ এখনো পর্যাপ্ত নয়। সময় এসেছে এসব দক্ষতা দ্রুত আয়ত্ত করে বাস্তব জীবনে প্রয়োগের। নইলে প্রযুক্তির দৌড়ে আমরা পিছিয়ে পড়ব।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন, পুর ও পরিবেশ কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. আসিফুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. এ. এইচ. রাশেদুল হোসেন, মেকানিক্যাল এন্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. কাজী আফজালুর রহমান, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান, চুয়েট এ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী খান আতাউর রহমান সান্টু, চুয়েট এ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম খান ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা প্রশাসক জনাব সাইফুল ইসলাম।

চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জি. এম. সাদিকুল ইসলাম, কর্মকর্তা সমিতির পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি জনাব সৈয়দ মোহাম্মদ ইকরাম প্রমুখ।

পরে কোরআন তিলাওয়াত করেন চুয়েটের স্টাফ কোয়াটার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হামিদ উল্লাহ। এর আগে সকাল ১০.৪০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-২ এর সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ।

এরপরপরই ২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এক আনন্দ র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালিতে রঙ-বেরঙের প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুনসহ চুয়েটের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীগণ অংশগ্রহণ করেন। পরে কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম সংলগ্ন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের স্মারক বৃক্ষরোপণ করা হয়।

চুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১২৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকার বৃত্তি প্রদান করা হয়। এরপর শিক্ষক বনাম ছাত্র ও কর্মকর্তা বনাম কর্মচারী প্রীতি ফুটবল ম্যাচ এবং পুরস্কার বিতরণ করা হয়।