রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ বছর পর দ্বাদশ সমাবর্তন
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪:১৫ | অনলাইন সংস্করণ
রাবি প্রতিনিধি

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে উদ্বোধনের মাধ্যমে সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এবারের সমাবর্তনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন হিসেবে দেখা হচ্ছে। দ্বাদশ এই সমাবর্তনে ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারী এবং ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের স্নাতকোত্তর, এমবিবিএস, বিডিএস ও ডিভিএম ডিগ্রিধারীরা অংশ নিচ্ছেন। পাশাপাশি ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এমফিল, এমডি ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারীসহ মোট ৫ হাজার ৩৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করছেন।
সমাবর্তন উপলক্ষে গ্র্যাজুয়েটদের পরিবার, স্বজন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। এতে অর্ধলাখের বেশি মানুষের সমাগম হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম ফায়েজ।
সমাবর্তন সফল করতে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, সেনাবাহিনী, ডিজিএফআই, ডিএসবি, এসএসএফ ও এনএসআইয়ের সদস্যদের তৎপরতায় পুরো ক্যাম্পাস নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা রয়েছে।
সমাবর্তন উপলক্ষে সকাল ৬টা থেকে নগরীর নির্দিষ্ট কয়েকটি পয়েন্ট থেকে ১৫টি বাসে গ্র্যাজুয়েটদের ক্যাম্পাসে আনা হচ্ছে। অনুষ্ঠান শেষে বাসগুলো আবার শহরে ফিরে যাবে। এছাড়া ক্যাম্পাসের এক নম্বর গেট এলাকা থেকে শাটল বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। জরুরি যানবাহন ছাড়া ক্যাম্পাসে অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। শাটল বাসে অভিভাবকরাও চলাচল করতে পারবেন।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬–১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী উম্মে সালমা নিঝুম বলেন, অ্যাকাডেমিক জীবনের একটি সুন্দর সমাপ্তি সমাবর্তন। দীর্ঘ ৭ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন হচ্ছে। আজ যখন পিছন ফিরে দেখি, তখন মনে হয় একদম প্রথম দিনের সেই অচেনা ক্যাম্পাস, নতুন বন্ধুদের সাথে প্রথম পরিচয়, সেই উদ্ভূত উত্তেজনা সবই যেন এক সুন্দর স্মৃতি হয়ে গেছে। কল্পনায় বহুবার দেখা সেই দিনটা অবশেষে সত্যি বাস্তবে এসে ধরা দিতে যাচ্ছে। পরিবার ও বন্ধুদের সাথে অনেক আনন্দ করছি। এটা আসলে অন্যরকম এক অনুভূতি।
আবেগাপ্লুত এক অভিভাবক বলেন, আজ আমার অনেক ভালো লাগছে। মেয়ে আমার তার পড়াশোনা শেষ করে এই দিনটি পেয়েছে। এখানে অনেক ভালো লাগছে। মেয়ে আমাকে ঘুরে ঘুরে সবকিছু দেখাচ্ছে।
ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১২–১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জহিরুল খান বলেন, রাবির এই দ্বাদশ সমবর্তনে এসে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কষ্টকর। যৌবনের একটা সময় যাদের সাথে ব্যয় করেছি আজ তাদের সাথেই আবার দেখা ও অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করা। জীবনের একটি সুন্দর দিন অতিবাহিত হলো।
দুপুর ১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে মূল সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
