ঢাকা বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

"আয়নাঘর" পরিদর্শন নিয়ে সরয়ার ফারুকীর পোস্ট

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের টর্চার সেল ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এই পরিদর্শন নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে আয়নাঘর পরিদর্শনের সময় তোলা কয়েকটি ছবি শেয়ার করেন ফারুকী। ছবির সঙ্গে তিনি লিখেছেন, "এরকমই কোনো একটা ঘরে হয়তো আমার বাল্যবন্ধু সাজেদুল ইসলাম সুমনকে আটকে রাখা হয়েছিল। এইরকমই কোনো একটা ঘরে অজানা আশংকায় সে কেঁপে কেঁপে উঠত। এইরকম একটা ঘরে বসেই হয়তো সে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে কাঁদতে কাঁদতে বলছিল, ‘আল্লাহ, তুমি আমাকে এই বারের জন্য বাঁচিয়ে দাও। আমি আর রাজনীতি করব না। আমার সন্তান ও মায়ের জন্য আমাকে বাঁচিয়ে দাও।’"

ফারুকী আরও লিখেছেন, "এরকমই একেকটা ঘরে আমরা সতেরো কোটি মানুষ আটকা ছিলাম ষোলো বছর। আর গোপনে বলতাম, ‘আল্লাহ, এই ডাইনির হাত থেকে আমাদের বাঁচিয়ে দাও।’"

স্মৃতিচারণা করে তিনি লিখেছেন, "সুমনের সাথে আমার শেষ কথা হয় উত্তরার এক হাসপাতালে লুকিয়ে থাকা অবস্থায়। ওর ভাগ্নে আবরারের একটা শ্যুট ছিল আমার সাথে। স্পষ্ট মনে আছে ওর শেষ কথা, ‘দোস্ত, আবরারকে সহজ করে নিস। নাহলে অ্যাকটিং খারাপ করবো।’"

তিনি আরও যোগ করেন, "এমনই এক জালিমের শাসনে ছিলাম যে, সুমনের জন্য একটা কথাও বলতে পারিনি। পরে জানলাম, মানুষরুপী জানোয়ার জিয়াউল আহসানের নির্দেশে তাকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়া হয়। যে বাবার ঘরে ফিরে সন্তানের সাথে ভাত খাওয়ার কথা ছিল, তাকে এই ডাইনির দল শীতলক্ষ্যার মাছেদের খাবারে পরিণত করে। এই হায়েনাদের হয়ে যখন কেউ কথা বলতে আসে, আমার মাথায় রক্ত উঠে যায়।"

‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনের সময় ড. ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন উপদেষ্টা, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম কর্মী এবং কয়েকজন ভুক্তভোগী। তিনি ঘুরে ঘুরে সেখানকার বীভৎস দৃশ্যগুলো দেখেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আওয়ামী লীগ শাসনামলকে ‘আইয়ামে জাহিলিয়াতের’ সঙ্গে তুলনা করেন এবং আয়নাঘরে চালানো নির্যাতনকে জাহেলি যুগের মতো বর্বর বলে মন্তব্য করেন।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী,আয়নাঘর,বাল্যবন্ধু
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত