কানাডায় অবসর নেই ববিতার
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৩:৩২ | অনলাইন সংস্করণ

কিংবদন্তী অভিনেত্রী ববিতা। বছরের বেশিরভাগ সময় একমাত্র ছেলে অনীকের কাছে কানাডায় থাকেন। বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। এ অভিনেত্রীর ৭২তম জন্মদিন। ১৯৫৩ সালে বাগেরহাট জেলায় জন্মগ্রহন করেন তিনি। তার আসল নাম ফরিদা আক্তার পপি। কিন্তু সিনেমায় আসার পর পরিচিতি পেয়েছেন ববিতা নামে। গত কয়েক বছর ধরেই বিশেষ এ দিনটি ছেলের সঙ্গেই পালন করার চেষ্টা করেন অভিনেত্রী। কিন্তু গত বছর অসুস্থতার কারণে ছেলেকে ছাড়া বাংলাদেশেই দিনটি কাটাতে হয়েছে। যেতে পারেননি ছেলের কাছে। এ বছর ছেলের সঙ্গেই জন্মদিন পালন করছেন। জন্মদিন নিয়ে এ অভিনেত্রী কখনই বিশেষ কিছু করেন না। তবে কানাডায় কীভাবে দিনটি উদযাপন করবেন, জানতে চাইলে ববিতা বলেন, ‘এখন অনিকের ছুটি নেই। অর্থাৎ আজকের দিনে তাকে অফিস করতে হবে। সত্যি বলতে, কানাডায়ও ঢাকার মতো অবসর নেই, সুযোগও নেই ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়ানোর। তবে অনিক অফিস থেকে ফিরে এলে আমরা মা ছেলে কোনো একটি সুন্দর জায়গায় ঘুরতে যাব। সেখানেই খাওয়া দাওয়া করে, মুহূর্তটা ধরে রাখার জন্য ছবিও তুলব। এভাবেই কেটে যাবে এবারের জন্মদিন। তবে দেশের সবাইকে খুব মিস করব। আমি যখন ইউনিসেফের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর ছিলাম তখন প্রতি বছর ছোট ছোট বাচ্চারা আসতো আমার বাসায়। তারা আমাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতো, অভিনয় করে দেখাতো, খুব ভালো লাগতো আমার। সেই সময়টার কথা খুব মনে পড়ে। যাই হোক, মনে পড়ছে সুচন্দা আপা, চম্পা আর আমেরিকায় থাকা আমার ভাইদের কথা। সবাইকে নিয়ে যদি জন্মদিন উদযাপন করা যেত, কতইনা ভালো হতো! সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন।’
সিনেমার আসার পেছনে ববিতার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন, তার বড় বোন চিত্রনায়িকা সুচন্দা। কিংবদন্তি নির্মাতা জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে ১৯৬৮ সালে অভিষেক হয় ববিতার। এতে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। তার নাম ফরিদা আক্তার পপি থেকে ‘ববিতা’ হয় জহির রায়হানের ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে। নায়িকা হিসেবে ববিতার প্রথম সিনেমা ‘শেষ পর্যন্ত’ মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট। এরপর থেকে নায়িকা হিসেবে অর্জন করেন তুমুল জনপ্রিয়তা। জহির রায়হান পরিচালিত ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি দর্শকপ্রিয়তা পেলেও তার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সিনেমা বলা হয় ‘অশনি সংকেত’কে। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় এই সিনেমায় অভিনয় করে ববিতা আন্তর্জাতিক অঙনেও দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তনের পর টানা তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন তিনি। এ ছাড়া ১৯৮৫ সালে আরেকবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী, ১৯৯৬ সালে শ্রেষ্ঠ প্রযোজক, ২০০২ ও ২০১১ সালে পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
