ধর্ম ট্যাগ করে আক্রমণ, ইয়াশ পেয়েছেন শিল্পীর সমর্থন

প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:২০ | অনলাইন সংস্করণ

অভিনেতা ইয়াশ রোহানের দুর্গাপূজার সময় প্রতিমার সামনে কপালে তিলকের ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করলে একাংশ নেটিজেন তা নিয়ে ধর্মীয় পরিচয় টেনে কটাক্ষ শুরু করেন। ঘটনাটি দ্রুত ভিউ এবং কমেন্টে ছড়িয়ে পড়লে অভিনেতাকে কটাক্ষ ও বয়কটের হুমকিও মেলে। এমন পারস্পরিক আক্রমণের পারিপার্শ্বিকতায় শিল্পী ও বিনোদন জগতের অনেকে তার পাশে দাঁড়ান এবং ভার্চুয়াল প্রতিহিংসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।

বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা ঠিক করার প্রসঙ্গে ইয়াশ রোহান যে ছবিটি পোস্ট করেছিলেন—সেখানেই কপালে তিলক করা অবস্থার একটি ছবি ছিল। ছবিটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং কিছু নেটিজেন ধর্মীয় পরিচয়কে কেন্দ্র করে তাকে আক্রমণের শিকার করেন। ওই কমেন্টগুলোতে ধর্মীয় ট্যাগিং করা, ‘বয়কট’ ঘোষণা—এমন কিছু মন্তব্যও দেখা যায়।

বিনোদন অঙ্গনের সহকর্মীরা সামাজিক মাধ্যমে ইয়াশের পাশে দাঁড়ান। বিশেষ করে ‘দেয়ালের দেশে’ নাটকের নির্মাতা মিশুক মনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানান। মিশুক লিখেছেন, যারা ধর্মের নাম ধরে ইয়াশকে বয়কট করার কথা বলছে, তাদের দর্শকও নন—এরা শিল্পকে বোঝে না। তিনি আরও বলেন, “ইয়াশ বহুবার তার ধর্ম-ভিত্তিক জটিলতার সম্মুখীন হয়েছে; আজকারের এই কটুক্তি তাকে বিচলিত করতে পারবে না—সে যথেষ্ট কুল ও স্ট্রং।”

মিশুক মনি তার পোস্টে আরো ঘোষণা করেন যে, যারা ইয়াশকে বয়কটের কথা বলেছে তাদের উদ্দেশ্যে তিনি সাহসী প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইয়াশকে নিয়ে নতুন নাটক প্রযোজনার ঘোষণাও দিয়েছেন—যেখানে তিনি প্রযোজক হিসেবে পাশে দাঁড়াবেন। পোস্টে মিশুক বলেন, শিল্পীর পরিচয়কে ধর্ম বা অন্যান্য ট্যাগ দিয়ে ভাঙা যাবে না; “ইয়াশ প্রথমে মানুষ, তারপর শিল্পী” — এটুকুই বলা যথেষ্ট।

মিশুক মনির ওই পোস্টটি ইয়াশের নজরে পড়ে; মিডিয়ায় দেখা যায় তিনি মন্তব্যের ঘরে কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানায়। তারիչার্যের ওই পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমর্থন পায়—অনেকে মিশুকের উদ্যোগকে সাহসী বলছেন এবং শিল্প-সম্প্রদায়ের একতা প্রশংসা করছেন।

বিনোদন অঙ্গনে ব্যক্তিগত ধর্মীয় অনুশীলন বা উৎসব উদযাপন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক মাধ্যমে সময়কালে ঝড় ওঠা নতুন ঘটনা নয়। তবে এই ঘটনার মতো ক্ষেত্রে সহকর্মী-সমর্থন দ্রুত সমস্যার রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবে ভারসাম্য আনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিল্পী-ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আচার-অনুষ্ঠান ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেই রাখা উচিত—আর সমালোচনা হলে তা মানবিক ও শিল্পগত মাপকাঠিতে সীমাবদ্ধ থাকা বাঞ্ছনীয়।

ইয়াশ রোহানের আশপাশের ঘটনাটি দেখিয়ে দিলো—সম্মিলিতভাবে শিল্পীকে সমর্থন করলে ভার্চুয়াল আক্রমণ ও সাম্প্রদায়িক কটাক্ষের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়া যায়। মিশুক মনির মতো নির্মাতাদের আগ্রাসী সমর্থন শিল্পচর্চাকে স্তব্ধ করে দেওয়া অপপ্রচারের বিরুদ্ধে শক্তিশালী বার্তা দেয়।