বিচ্ছেদের পর অর্থকষ্টে পড়েছিলেন জোলি, প্রাক্তনের সাহায্যেই কেনেন বাড়ি

প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২২:০৭ | অনলাইন সংস্করণ

হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি জানিয়েছেন, তালাকের পর আর্থিক সংকটে পড়েছিলেন তিনি। সেই সময় প্রাক্তন স্বামী ব্র্যাড পিটের কাছ থেকে সুদে ঋণ নিতে হয়েছিল তাকে। জোলি বলেন, তিনি কখনোই পিটের কাছ থেকে ভরণপোষণ বা আর্থিক সহায়তা চাননি, তবে নিজের সঞ্চয় ফরাসি সম্পত্তি ‘শ্যাটো মিরাভাল’-এ বিনিয়োগ করা থাকায় বাড়ি কেনার মতো অর্থ তার হাতে ছিল না।

‘পিপল’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিরাভাল নিয়ে জোলি ও পিটের মধ্যে চলমান আইনি লড়াইয়ের মধ্যেই এই নতুন তথ্য উঠে এসেছে।

আদালতে দাখিল করা নতুন নথিতে জোলি জানান, আর্থিক চাপ সামাল দিতে তিনি পিটের কাছ থেকে ঋণ নেন, যা সুদসহ ফেরত দেন। সম্পর্কের টানাপোড়েন কমানোর আশায় লস অ্যাঞ্জেলেস ও মিরাভালের যৌথ বাড়ির মালিকানাও বিনামূল্যে পিটকে দিয়েছিলেন তিনি।

জোলির ভাষায়, মিরাভাল তাদের পারিবারিক জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল—সেখানে তারা বিয়ের অনুষ্ঠান করেছিলেন এবং ছয় সন্তানকে বড় করেছেন। তবে ২০১৬ সালে বিচ্ছেদের পর থেকে জোলি বা তাদের সন্তানরা আর কখনো সেই বাড়িতে ফেরেননি, কারণ সেটি এখন তাদের কাছে অতীতের এক বেদনাদায়ক স্মৃতি।

নতুন আদালতীয় নথিতে জোলি তাদের বিবাহবিচ্ছেদের পেছনের মানসিক কষ্টের কথাও তুলে ধরেন।

তিনি লেখেন, “বিচ্ছেদের সময়কার ঘটনাগুলো আমার এবং সন্তানদের জন্য ছিল গভীরভাবে বেদনাদায়ক।” ২০১৬ সালে ফ্রান্স থেকে ক্যালিফোর্নিয়াগামী এক ফ্লাইটে ব্র্যাড পিট তাদের ওপর শারীরিক ও মৌখিক নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ এনে তিনি তালাকের আবেদন করেন। যদিও পিট এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বিচ্ছেদের পর জোলি সন্তানদের জীবনে পিতার উপস্থিতি বজায় রাখতে পিটের কাছাকাছি এলাকায় নতুন বাড়ি কেনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তখন তার অধিকাংশ সম্পদ মিরাভাল সম্পত্তিতে আটকে থাকায় তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তাদের ছয় সন্তানের মধ্যে শুধু কনিষ্ঠ পুত্র নক্সই নিয়মিতভাবে পিতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে জানা গেছে।

মিরাভাল সম্পত্তি নিয়ে তাদের আইনি লড়াই শুরু হয় ২০২১ সালে, যখন জোলি তার অংশ ৬৪ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন এসপিআই গ্রুপের মালিক ইউরি শেফলারের কাছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিট মামলা করেন, অভিযোগ করে যে বিক্রিটি তাদের পারস্পরিক চুক্তি ভঙ্গ করে করা হয়েছে। এরপর থেকে মামলাটি আরও জটিল হয়ে ওঠে, যেখানে গোপনীয়তা চুক্তি (NDA) ও এসপিআই গ্রুপের নির্বাহী অ্যালেক্সি অলিয়ানিকের সাক্ষ্য নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এখনো আদালতের চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হয়নি।

এই দীর্ঘ আইনি লড়াই শুধু তাদের সম্পর্কের ভাঙনের প্রতীক নয়, বরং হলিউডের অন্যতম আলোচিত দম্পতির জীবনের এক কঠিন অধ্যায়ের প্রতিফলন।