প্রতিদিন ডিম খেলে যা হয়
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৯ | অনলাইন সংস্করণ

ডিম প্রোটিনে সমৃদ্ধ, প্রয়োজনীয় ভিটামিনে ভরপুর এবং প্রায় প্রতিটি খাবারের সঙ্গে সহজে মানিয়ে যায়। সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে দ্রুত রাতের খাবার—ডিমের নানাবিধ ব্যবহার সত্যিই অতুলনীয়। কিন্তু এই ডিম যদি এক মাস ধরে তোমার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার অংশ হয়ে যায়, তাহলে কী হতে পারে? একসময় কোলেস্টেরলের মাত্রার জন্য ডিমের সমালোচনা করা হলেও, সাম্প্রতিক গবেষণা কিন্তু একেবারেই ভিন্ন কথা বলছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক—৩০ দিন ধরে প্রতিদিন ডিম খেলে কী হয়।
পেশী তৈরি করে: ডিম একটি সম্পূর্ণ প্রোটিনের উৎস—অর্থাৎ এতে পেশী মেরামত ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ৯টি অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিডই রয়েছে। পোল্ট্রি সায়েন্স–এ প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, নিয়মিত ডিম খেলে তা পেশীর ভর বৃদ্ধি করে, বিশেষ করে যখন এর পাশাপাশি ব্যায়ামও করা হয়। ২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডিমের উচ্চমানের প্রোটিন সহজে হজমযোগ্য এবং ব্যায়ামের পর দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করে।
হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখে: কয়েক বছর ধরে কোলেস্টেরলের কারণে ডিমকে সন্দেহের চোখে দেখা হতো। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, পরিমিত পরিমাণে ডিম খাওয়া আসলে হৃদ্যন্ত্রের জন্য উপকারী। ২০২৩ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ডিম খেলে এটি এইচডিএল (ভালো কোলেস্টেরল) বাড়ায় এবং এলডিএল কণার ভারসাম্য বজায় রাখে, যা অধিকাংশ মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ডিমে থাকা কোলিন এবং ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন এক থেকে দুটি ডিম সাধারণত সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নিরাপদ।
মস্তিষ্ক ও চোখ তীক্ষ্ণ রাখে: ডিম কোলিনে ভরপুর। কোলিন হলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, স্মৃতিশক্তি ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ২০২৩ সালের গবেষণা অনুযায়ী, কোলিন নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সহায়তা করে, যা মস্তিষ্ককে সক্রিয় ও মনোযোগী রাখে। এছাড়া ডিমের কুসুমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন ও জেক্সানথিন চোখকে নীল আলোর ক্ষতি এবং বয়সজনিত দৃষ্টিশক্তি হ্রাস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে: যদি তুমি ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাও, তাহলে ডিম হতে পারে এক দারুণ সঙ্গী। এতে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য তৃপ্তি দেয় এবং অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমায়। ২০০৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সকালের নাস্তায় ডিম খান তারা সারা দিনে তুলনামূলকভাবে কম ক্যালোরি গ্রহণ করেন।
ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী: ডিম শুধু শরীরের জন্যই নয়, এটি চেহারার জন্যও উপকারী। এতে বায়োটিন, ভিটামিন ডি ও অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে, যা ত্বক, চুল ও নখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ২০১৭ সালের এক গবেষণা অনুসারে, বায়োটিন চুলকে মজবুত করে ও ভাঙা রোধ করে; অন্যদিকে প্রোটিন কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, যা ত্বককে মসৃণ ও নমনীয় করে তোলে।
