অনলাইন সংস্করণ
১৭:৫৭, ২৩ জুলাই, ২০২৫
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরায়েলের যে কোনো সামরিক আগ্রাসনের জবাব দিতে তেহরান সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
মঙ্গলবার আল জাজিরা টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইরানের সেনাবাহিনী আবারও দখলকৃত অঞ্চলের গভীরে হামলা চালাতে প্রস্তুত রয়েছে।
ইরানি প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ‘ইসরায়েল আমাদের ওপর হামলা চালানোর পর আমরা তাদের ওপর ব্যাপক পাল্টা আঘাত হেনেছি, যদিও তারা সেই ক্ষয়ক্ষতি গোপন করেছে।’
প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান আরও বলেন, ‘ইসরায়েল ইরানের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং সরকারের পতন ঘটিয়ে ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’
এসময় তিনি স্পষ্টভাবে জানান, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, তবে যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তার উপরও নির্ভর করি না। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে নিজেদের রক্ষা করব। আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সফল হয়েছে, আর এই সাফল্য নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই ইসরায়েল সেটি বাধা দিতে চায়। যুদ্ধ বন্ধের অনুরোধ করতে গিয়ে তারা নিজেরাই দুর্বলতা প্রকাশ করেছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ইরান কখনোই আত্মসমর্পণ করেনি, আর ভবিষ্যতেও করবে না। এটা আজ বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কার। তবে আমরা কূটনীতি ও সংলাপে বিশ্বাস করি। সাম্প্রতিক যুদ্ধের সময় এই অঞ্চলের দেশগুলো ইরানের প্রতি যে সহায়তামূলক অবস্থান নিয়েছে, তা অতীতে দেখা যায়নি।’
পারমাণবিক ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান পরমাণু অস্ত্রের ঘোরতর বিরোধী। এটি ইরানের রাজনৈতিক, ধর্মীয়, মানবিক এবং কৌশলগত অবস্থানের প্রতিফলন। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখব। ভবিষ্যতের যেকোনো আলোচনায় জয়-পরাজয় নয়, বরং পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তি থাকতে হবে। ইরান হুমকি বা কোনো দেশের নির্দেশ মেনে চলবে না।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প বলেছিলেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকা উচিত নয়। আমরা সেটি মেনে নিচ্ছি না তার কথায় নয়, বরং আমাদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির দেওয়া ফতোয়ার কারণে। কেউ যদি বলে আমাদের কর্মসূচি ধ্বংস হয়ে গেছে, তবে তারা বোঝে না—ইরানের ক্ষমতা আমাদের বিজ্ঞানীদের চিন্তায়, মননে, এবং মেধায় নিহিত।’
কাতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা কাতারে হামলা করিনি এবং কখনো করবও না। কাতার আমাদের পালিত বোনের মতো, তাদের জনগণ আমাদের ভাই। আল-উদেইদ ঘাঁটিতে আমেরিকান বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় কাতারের অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া আমরা বুঝি। তাই আমি সরাসরি কাতারের আমিরকে ফোন করেছি এবং আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। আমরা তাদের প্রতি সদিচ্ছা নিয়ে এগোই এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে তাদের পাশে থাকার জন্য প্রস্তুত।’