অনলাইন সংস্করণ
১১:৫৩, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের অমানবিক বোমাবর্ষণে একদিনে অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৩ জন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে পুরো পরিবারকে টার্গেট করে নিশ্চিহ্ন করছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অবিলম্বে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে হামাস।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকায় তীব্র হামলা চালায়। আশ্রয়কেন্দ্র ও তাঁবুতেও আঘাত হানা হয়, যেখানে আশ্রয় নিয়েছিল বাস্তুচ্যুত মানুষ।
জাকিয়া সামি নামে এক নারীর বর্ণনায়, ‘শেখ রাদওয়ান জ্বলছে। যদি গাজা সিটির দখল থামানো না যায়, আমরা সবাই মরব।’
গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্যে জানা যায়, গত তিন সপ্তাহে অন্তত ১০০টি রোবট বিস্ফোরণের মাধ্যমে আবাসিক ব্লক ও মহল্লা ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। শুধু গাজা সিটিতেই ১৩ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১ হাজার ১০০ ফিলিস্তিনি। আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন ‘প্রলয়ংকরী’ রূপ নিয়েছে, পুরো মহল্লা একে একে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।
হামাস জানিয়েছে, তারা একটি সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। এদিকে উত্তর গাজার আল-জারিসি পরিবারের বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে ‘ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়েছে সংগঠনটি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, অবরোধে খাদ্য ও সহায়তা প্রবেশে কড়াকড়ি থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে একজন শিশু। চলমান অবরোধে এখন পর্যন্ত ক্ষুধাজনিত কারণে মারা গেছে ৩৬৭ জন ফিলিস্তিনি, এর মধ্যে ১৩১ জন শিশু।
জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, গাজা সিটির দখল অভিযান প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। গত আগস্টেই জোরপূর্বক নতুন করে ৮২ হাজার মানুষকে স্থানান্তর করা হয়েছে। ইউনিসেফ বলছে, আগামী বছরে তীব্র অপুষ্টিতে ১ লাখ ৩২ হাজার শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে।
ইতিমধ্যে উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে, যা দ্রুত দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে। সহায়তাকর্মীদের মতে, প্রতিদিন টিকে থাকাই এখন ফিলিস্তিনিদের জন্য এক কঠিন সংগ্রাম।