নেপালে মাত্র দুই দিনে যেভাবে সরকারের পতন

প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:৩৪ | অনলাইন সংস্করণ

নেপালে মাত্র দুই দিনের আন্দোলনেই প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া জেন জি আন্দোলনের তীব্র চাপ এবং তার মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী নেতাদের পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীকে নতি স্বীকার করতে হয়েছে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) থেকে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ও অন্যান্য প্রধান শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়।

এদিন বিক্ষোভকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিধিনিষেধ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। সরকার ফেসবুক, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম বন্ধের নির্দেশ দেয়।

বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং তাজা গুলি ব্যবহার করে। সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ৫০০ জন আহত হন।

দুই দিনে যেভাবে সরকারের পতন, নিম্নে দেওয়া হলো:-

৪ সেপ্টেম্বর–সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ

ফেসবুক-এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধের নির্দেশ দেয় সরকার। কারণ হিসেবে বলা হয় স্থানীয়ভাবে রেজিস্ট্রেশন না থাকা এবং মিথ্যা তথ্য ও হিংসাত্মক কনটেন্টের উদ্বেগের কথা।

৮ সেপ্টেম্বর–জেন জি বিক্ষোভ শুরু

হাজার হাজার বিক্ষোভকারী, বিশেষ করে ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় নেমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। কাঠমান্ডু, পোখরা, চিতওয়ানসহ দেশের অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে ঢোকার চেষ্টার করলে পুলিশ জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং তাজা গুলি ব্যবহার করে। এতে অন্তত ১৯ জন নিহত হন, আহত হন প্রায় ৫০০ জন।

৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ

বিক্ষোভ দমন চলাকালীন হতাহতের জন্য নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে পদত্যাগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক।

৮ সেপ্টেম্বর রাত- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার

জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধাদেশ প্রত্যাহার করে সরকার। যোগাযোগমন্ত্রী পৃথ্বি সুব্বা গুরুং নিশ্চিত করেন, ‘শাটডাউন তুলে নেওয়া হয়েছে … এখন তারা কাজ করছে।’

এছাড়া ১৫ দিনের তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা ঘোষণা করা হয়।

৯ সেপ্টেম্বর- আরও তীব্র বিক্ষোভ

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরও আন্দোলন থামেনি। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট এবং কয়েকজন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন; রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশজুড়ে সেনা মোতায়েন করা হয় এবং ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

প্রধানমন্ত্রী ওলি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন এবং সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। তবে কয়েক ঘণ্টা পরেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। এরপর খবর আসে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের খবর।