অনলাইন সংস্করণ
১২:২৯, ১০ অক্টোবর, ২০২৫
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার ওরাকজাই জেলায় সেনাবাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে দেশটির সেনা ও পুলিশ যৌথ বাহিনী। এতে অন্তত ৩০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের আন্তঃদপ্তর সংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর)।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আইএসপিআর জানায়, ৮ অক্টোবর ওরাকজাই জেলায় সেনাবাহিনীর ওপর হামলার পর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ৯ অক্টোবর বৃহৎ পরিসরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এতে সেনা-পুলিশ যৌথ বাহিনী ‘কমপক্ষে ৩০ জন সন্ত্রাসীকে নরকে পাঠিয়েছে’ বলে দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদের শেকড় উপড়ে ফেলতে সেনাবাহিনী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
গত বুধবার (৮ অক্টোবর) ওরাকজাই ও পার্শ্ববর্তী কুররম জেলার সংযোগ সড়কে সেনাবাহিনীর গাড়িবহরে বন্দুক ও বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। এতে দুই কর্মকর্তা—লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনাইদ তারিক এবং মেজর তায়াব রাহাতসহ মোট ১১ সেনা নিহত হন, আহত হন আরও কয়েকজন।
আইএসপিআর সূত্রে জানা যায়, হামলার আগের দিনগুলোতে (৭ ও ৮ অক্টোবর) ওরাকজাই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৯ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে সেনাবাহিনী। এরপর অভিযানের দলটি ফেরার সময়ই টিটিপি ওই হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা আগেভাগে অবস্থান নিয়ে সেনাদের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা করে এবং সড়কে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে দুটি সামরিক যান ধ্বংস হয়।
এদিকে ৯ অক্টোবর ওরাকজাইয়ের পাশাপাশি খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলাতেও আরেকটি অভিযান চালিয়ে আটজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে বলে আইএসপিআর জানিয়েছে।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। এই দুটি অঞ্চল যথাক্রমে তেহরিক-ই তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) ও বিচ্ছিন্নতাবাদী বালোচ লিবারেশন আর্মির (বিএলএ)-এর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।
ইসলামাবাদভিত্তিক থিংকট্যাংক ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’ (সিআরএসএস) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংসতা বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। এই সময়ে দেশজুড়ে ৩২৯টি ঘটনায় অন্তত ৯০১ জন নিহত এবং ৫৯৯ জন আহত হয়েছেন।