
আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র রূপ নিচ্ছে। শনিবার রাতভর সংঘর্ষের পর উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ ও দাবি তুলেছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, তারা সীমান্তের অন্তত ১৯টি আফগান পোস্ট দখলে নিয়েছে। বিপরীতে, আফগান তালেবান জানিয়েছে, তারা ২৫টি পাকিস্তানি সামরিক চৌকি দখল করেছে এবং এ সময় ৫৮ পাকিস্তানি সেনা সদস্যকে হত্যা ও আরও ৩০ জনকে আহত করেছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে তালেবান সরকারের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, আফগান বাহিনী ২৫টি পাকিস্তানি সামরিক চৌকি দখল করেছে; হামলায় ৫৮ পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছে।
মুজাহিদ আরও বলেন, আফগানিস্তানের সকল সরকারি সীমান্ত এবং 'কার্যত রেখার' পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং অবৈধ কার্যকলাপ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা হয়েছে।
তালেবানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আমাদের বাহিনী সীমান্ত সংলগ্নে প্রতিশোধমূলক এবং সফল অভিযান চালিয়েছে। যদি বিরোধী পক্ষ আবারও আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে, তাহলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং কঠোর জবাব দেবে।
কাবুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পাকিস্তান গত সপ্তাহে আফগান রাজধানীতে বিমান হামলা চালায়। এর জবাবেই সীমান্তে লড়াই শুরু হয়েছে।
তবে পাকিস্তান সরকার ওই হামলার দায় অস্বীকার করেছে। বরং তারা কাবুলকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে—তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে আশ্রয় দেওয়া বন্ধ না করলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, অভিযানে তালেবান যোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে এবং বহু আফগান সেনা হতাহত হয়েছেন।
এদিকে, চলমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ইরান, কাতার ও সৌদি আরব দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।
তারা বলছে, দুই দেশের মধ্যে বিরোধ যাতে পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন না করে, সে লক্ষ্যে সংলাপ ও কূটনৈতিক সমাধান জরুরি।