নিজের দেশেই মার্কিন আগ্রাসনের ডাক, বিতর্কে নোবেলজয়ী মাচাদো
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ২০:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ

বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ভেনেজুয়েলার বিতর্কিত গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার এক মাসও না যেতেই নিজ দেশের বিরুদ্ধে সামরিক হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে উসকানি দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত এই নেত্রী সাম্প্রতিক মন্তব্যে আবারও বিতর্কের জন্ম দিলেন।
রোববার (২ নভেম্বর) আরটি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন সামরিক বাহিনী মোতায়েনের পর মাচাদো মন্তব্য করেন, মার্কিন পদক্ষেপের ফলে দেশটির শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন আসতে পারে। তিনি ইঙ্গিত দেন, প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানাবেন।
ওয়াশিংটন ইতোমধ্যে মাদুরোর বিরুদ্ধে মাদক পাচারচক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে চলেছে। বছরের শুরুতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনী মোতায়েন করেন। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর কথা বলে ভেনেজুয়েলার উপকূলে বেশ কয়েকটি হামলাও চালায় যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্লেষকদের মতে, এ অভিযান শুধুমাত্র মাদক বিরোধের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর মাধ্যমে ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক পরিবর্তনেরও চেষ্টা থাকতে পারে।
সম্প্রতি ব্লুমবার্গের ‘দ্য মিশাল হুসেন শো’-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাচাদোকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি কি ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক পদক্ষেপকে সমর্থন করেন? জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান উত্তেজনাই মাদুরোকে বুঝতে বাধ্য করবে যে তার ক্ষমতা ছাড়ার সময় এসে গেছে। তিনি দাবি করেন, গত বছরের নির্বাচনে মাদুরো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছেন এবং বর্তমান সরকারকে ‘মাদক সন্ত্রাসবাদী কাঠামো’ বলে অভিহিত করেন।
অন্যদিকে, মাদুরো দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন যে যুক্তরাষ্ট্র তার সরকারবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়ন করছে এবং মাচাদো ওয়াশিংটনের স্বার্থে কাজ করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন আগ্রাসন ঠেকাতে চীন, রাশিয়া ও ইরানের সহায়তাও চেয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে মাচাদোর সম্পর্ক বহুদিনের। ২০০৫ সালে তাকে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ. বুশ। মাচাদো ইসরায়েল ও নেতানিয়াহুরও প্রকাশ্য সমর্থক হিসেবে পরিচিত। এর আগেও, ২০১৮ সালে তিনি ইসরায়েলকে চিঠি লিখে ভেনেজুয়েলায় সামরিক হামলার অনুরোধ করেছিলেন।
এমনকি গত ১০ অক্টোবর নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণার দিনই তিনি তার পুরস্কারটি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উৎসর্গ করেন।
