ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করলো ইসরায়েল, মুসলিমদের জন্য কারফিউ
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের হেবরনে মুসলিমদের জন্য ইব্রাহিমি মসজিদ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে শহরের পুরোনো অংশে ফিলিস্তিনিদের ওপর কঠোর কারফিউও জারি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের ইহুদি ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘ্নে পালনের সুযোগ দিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাতে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হেবরনের দক্ষিণাঞ্চলীয় পুরোনো শহর এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী কয়েক দিন ধরে কারফিউ জারি রেখেছে এবং ইব্রাহিমি মসজিদ মুসলিমদের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।
স্থানীয় কর্মী ও হেবরন ডিফেন্স কমিটির সদস্য আরেফ জাবের জানান, শুক্রবার সকাল থেকে পুরোনো শহরের বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ কার্যকর রয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা পুরোনো শহরে প্রবেশের সামরিক চেকপয়েন্টগুলো বন্ধ করে দিয়েছে এবং যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ করে রেখেছে।
এই পরিস্থিতিতে অনেক ফিলিস্তিনি তাদের নিজ ঘরে ফিরতে পারেননি। বাধ্য হয়ে হেবরনের অন্য এলাকায় আত্মীয়দের বাড়িতে রাত কাটাতে হয়েছে।
জাবের জানান, শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে দুই দফায় শত শত ইসরায়েলি অবৈধ বসতকারী ভারী সামরিক নিরাপত্তায় পুরোনো শহর এলাকায় প্রবেশ করে রাস্তায় উসকানিমূলক শোভাযাত্রা করেছে।
আরেফ জাবের আরও বলেন, কারফিউয়ের এই পুরো প্রক্রিয়া আসলে ইব্রাহিমি মসজিদের মুসলিম অংশ সম্পূর্ণ দখলে নেওয়া এবং সেটিকে সিনাগগে রূপান্তরের দীর্ঘমেয়াদি ইসরায়েলি পরিকল্পনার অংশ।
ফিলিস্তিনি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন ইব্রাহিমি মসজিদের সুক গেট এবং পূর্ব দিকের প্রধান গেট বন্ধ করে রেখেছে। জানালাগুলোও ঢেকে দেওয়া হয়েছে, যাতে বাইরে থেকে দেখা বা প্রবেশের সুযোগ না থাকে।
হেবরনের পুরোনো শহরে অবস্থিত ইব্রাহিমি মসজিদ সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। এখানে প্রায় ৪০০ অবৈধ বসতি স্থাপনকারী বাস করে এবং তাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকে প্রায় ১৫০০ ইসরায়েলি সেনা।
১৯৯৪ সালে এক ইসরায়েলি বসতকারীর হামলায় ২৯ জন ফিলিস্তিনি মুসল্লি নিহত হওয়ার পর মসজিদটি দুই ভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে ৬৩ শতাংশ অংশ ইহুদিদের উপাসনার জন্য বরাদ্দ, আর ৩৭ শতাংশ অংশ মুসলিমদের জন্য। ইহুদিদের বরাদ্দ অংশেই মসজিদের আজান দেওয়ার কক্ষটিও রয়েছে।
ইসরায়েলের একতরফা ব্যবস্থাপনায় বছরের ১০ দিন ইহুদি উৎসব উপলক্ষে মসজিদটি পুরোপুরি মুসলিমদের জন্য বন্ধ থাকে, আর ইসলামি উৎসবের ১০ দিন ইহুদিদের জন্য বন্ধ রাখা হয়। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মুসলিমদের জন্য নির্ধারিত পূর্ণ প্রবেশাধিকার আর কার্যকর রাখা হয়নি।
