সংঘাতের পর ইউরেনিয়াম কার্যক্রম বন্ধ: ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৫ | অনলাইন সংস্করণ

গত জুনে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পর থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি স্থগিত রেখেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি এ দাবি করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, বর্তমানে ইরানে পরমাণু প্রকল্প সংক্রান্ত কোনো গোপন স্থাপনা নেই। বেসামরিক ও শান্তিপূর্ণ খাতে পরমাণুশক্তির ব্যবহার ইরানের ন্যায্য অধিকার এবং সেই অধিকারের প্রশ্নে তেহরান অনড় থাকবে।
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি হয়। গত জুনের সেই হামলার পর থেকেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি স্থগিত রয়েছে। তার ভাষায়, ইরান বর্তমানে সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালাচ্ছে না।
আরাঘচি বলেছেন, ইরানের কোনো গোপন বা অঘোষিত পরমাণু স্থাপনা নেই। যেসব স্থাপনা রয়েছে সেগুলোর সব তথ্য জাতিসংঘকে সরবরাহ করা হয়েছে এবং সেগুলো জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
গত ৬ জুন আইএইএ এক বিবৃতিতে জানায়, ইরানের কাছে কমপক্ষে ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত আছে, যার সমৃদ্ধতার মান ৬০ শতাংশ। যদি তা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা যায়, তাহলে সহজেই পরমাণু বোমা তৈরির মতো সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব। ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ফার্দো, নান্তাজ এবং ইস্ফাহান—এই তিন শহরে অবস্থিত।
আইএইএ-এর বিবৃতির ছয় দিন পর ১২ জুন ইসরায়েল ইরানের ওপর বিমান হামলা চালায়। ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি পৌঁছেছে—এ অভিযোগ তুলে ওই হামলার কারণ ব্যাখ্যা করেছিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। সংঘাতের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে যুক্ত হয়। পরে ২৪ জুন ইরান, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়।
১২ দিনের সংঘাতে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত সেপ্টেম্বরে স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির প্রধান মোহাম্মদ এসলামি জানান, ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেওয়া সর্বশেষ সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি আবারও জোর দিয়ে বলেন, শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক খাতে পরমাণুশক্তির ব্যবহার ইরানের ন্যায়সঙ্গত অধিকার। এই অধিকার থেকে তেহরান কোনোভাবেই সরে আসবে না।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইরানের অবস্থানকে বুঝবে এবং সেটিকে স্বীকৃতি দেবে। সূত্র : স্কাই নিউজ
