শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বন্যায় প্রাণহানি বেড়ে ১৫৯, নিখোঁজ দুই শতাধিক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৯ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রবল বন্যায় শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৯ জনে, আর নিখোঁজ রয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। দুর্যোগ থেকে বাঁচতে প্রায় ১ লাখ ৮ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে।
ঘূর্ণিঝড় দিতওয়া–র প্রভাবে সৃষ্ট এই বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই লাখেরও বেশি বাড়িঘর, এর মধ্যে ২০ হাজারের বেশি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ ভেঙে পড়ায় দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকা এখনো অন্ধকারে এবং নিরাপদ পানির সংকটে রয়েছে।
কেলানি নদীর পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় কয়েকটি এলাকা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কান্ডি এবং বাদুল্লা জেলাএসব এলাকার অনেক গ্রামই এখনো বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
বাদুল্লার মাসপান্না গ্রামের বাসিন্দা সামান কুমারা জানান, তাদের গ্রামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে… বাকিরা মন্দিরে বা যে ক’টি ঘর অক্ষত আছে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। পাহাড়ধসের কারণে সব রাস্তা বন্ধ, খাবার নেই, পানিও শেষ।
উত্তর-মধ্যাঞ্চলের কুরুণাগালা জেলায় একটি বৃদ্ধাশ্রমে পানিবন্দি হয়ে মারা গেছেন ১১ জন। আনুরাধাপুরায় পানিতে তলিয়ে যাওয়া একটি বাস থেকে নৌবাহিনী ৬৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধার হওয়া ডব্লিউএম শান্তা বলেন, আমরা বাঁচতে পেরেছি সৌভাগ্যক্রমে… ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলাম, হঠাৎ এক অংশ ধসে যায়। তিনজন নারী পানিতে পড়ে গেলেও পরে সবাইকে টেনে তোলা হয়।
বন্যা ও ভূমিধসের ভয়াবহতার কারণে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং বিদেশে থাকা নাগরিকদের আর্থিক সহযোগিতা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ঘূর্ণিঝড় দিতওয়া দেশটির পূর্ব উপকূলে আঘাত হানার পর দুর্বল হয়ে সরে গেলেও এখনো মৌসুমি বৃষ্টি চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্রীলঙ্কায় এমন তীব্র আবহাওয়া খুবই বিরল। এর আগে দেশে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০০৩ সালের জুনে, তখন প্রাণহানি ঘটেছিল ২৫৪ জনের।
শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডেও চলমান বর্ষণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
