অভিবাসন দমনে আরও কঠোর হবেন ট্রাম্প

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নতুন বছর থেকে অভিবাসন দমনে আরও কঠোর হতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২৬ সালের জন্য নতুন বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়ে কর্মস্থলে অভিযান ব্যাপকভাবে বাড়ানো, নতুন আটককেন্দ্র স্থাপন এবং হাজার হাজার এজেন্ট নিয়োগের পরিকল্পনা করেছেন। খবর রয়টার্সের।

ট্রাম্প ইতোমধ্যে বড় শহরগুলোতে অভিবাসন এজেন্টদের (আইসিই) সংখ্যা বাড়িয়েছেন। এসব শহরে আবাসিক এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে এবং বাসিন্দাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। ফেডারেল এজেন্টরা কিছু বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালালেও, অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ খামার, কারখানা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এড়িয়ে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে বৈধ কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীদের কাজ করা সাধারণ ঘটনা।

মিয়ামি শহরে বড় অভিবাসী জনসংখ্যার জন্য ট্রাম্পের দমননীতি সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। গত সপ্তাহে প্রায় তিন দশক পরে শহরটি প্রথম ডেমোক্র্যাট মেয়র নির্বাচিত করেছে। নবনির্বাচিত মেয়র বলেছেন, এটি আংশিকভাবে প্রেসিডেন্টের নীতির প্রতিক্রিয়া। স্থানীয় নির্বাচন ও জরিপে আক্রমণাত্মক অভিবাসন কৌশল নিয়ে ভোটারদের উদ্বেগ বাড়ছে।

দেশটির মধ্যপন্থি রিপাবলিকান মাইক মাদ্রিদ বলেছেন, মানুষ এখন এটাকে শুধু অভিবাসন প্রশ্ন হিসেবে দেখছেন না, বরং অধিকার লঙ্ঘন, ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া লঙ্ঘন এবং সংবিধানবহির্ভূতভাবে আবাসিক এলাকা সামরিকীকরণ হিসেবে দেখছেন। নিঃসন্দেহে এটি প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকানদের জন্য সমস্যা।

জনগণের অস্বস্তি বাড়ছে মুখোশধারী ফেডারেল এজেন্টদের আক্রমণাত্মক কৌশল নিয়ে। যেমন আবাসিক এলাকায় টিয়ার গ্যাস ব্যবহার এবং মার্কিন নাগরিকদের আটক। ট্রাম্পের অভিবাসন-নীতির সামগ্রিক অনুমোদনের হার মার্চে ৫০ শতাংশ থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ৪১ শতাংশে নেমেছে।

জোরদার অভিযানের পাশাপাশি ট্রাম্প লাখ লাখ হাইতিয়ান, ভেনেজুয়েলান ও আফগান অভিবাসীর অস্থায়ী বৈধ মর্যাদা কেড়ে নিয়েছেন, যা নির্বাসনযোগ্য ব্যক্তির সংখ্যা বাড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট প্রতি বছর ১০ লাখ অভিবাসী নির্বাসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও এ বছর সম্ভবত তা পূরণ হবে না। জানুয়ারিতে তার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ ২২ হাজার অভিবাসীকে নির্বাসন করা হয়েছে।

হোয়াইট হাউজের বর্ডার জার টম হোম্যান বলেন, ট্রাম্প ঐতিহাসিক নির্বাসন অভিযানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন, অপরাধীদের অপসারণ করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করেছেন। আইসিই আরও কর্মকর্তা নিয়োগ ও আটকের ক্ষমতা বাড়ালে গ্রেফতারের সংখ্যা অনেক বাড়বে।

সরকারি তথ্য বলছে, জনসমক্ষে অপরাধীদের ওপর জোর দেওয়া সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন আগের প্রশাসনগুলোর চেয়ে বেশি সংখ্যক এমন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে, যাদের অভিবাসন লঙ্ঘন ছাড়া অন্য কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই। নভেম্বরের শেষে আইসিই কর্তৃক গ্রেফতার ও আটক প্রায় ৫৪ হাজার ব্যক্তির মধ্যে ৪১ শতাংশেরই অভিবাসন লঙ্ঘন ছাড়া কোনও অপরাধের রেকর্ড ছিল না। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহগুলোতে এই হার ছিল মাত্র ৬ শতাংশ।

ট্রাম্প প্রশাসন বৈধ অভিবাসীদেরও টার্গেট করেছে। এজেন্টরা মার্কিন নাগরিকদের স্ত্রীদের গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গ্রেফতার করেছে, কিছু দেশের ব্যক্তিদের নাগরিক হওয়ার মুহূর্তে আটক করেছে এবং হাজার হাজার স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করেছে।

 

আবা/এসআর/২৫