ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

লেখকরা ন্যায়বোধ প্রতিষ্ঠা করতে চান : খায়রুজ্জামান লিটন

লেখকরা ন্যায়বোধ প্রতিষ্ঠা করতে চান : খায়রুজ্জামান লিটন

সমাজের কাছে লেখক ও সাংবাদিকদের দায়বদ্ধতার বিষয়টি পরিষ্কার বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি একজন সৃষ্টিশীল মানুষ কখনও জেনেশুনে অন্যায় করতে পারেন না। অন্যায় দেখে চুপ থাকার প্রশ্নও আসে না। এই কারণে লেখক ও সাংবাদিকদের বলা হয় সমাজের বিবেক।

তিনি বলেন, সমাজের বুকে যখন দমন-পীড়ন নিয়তি হয়ে দাঁড়ায়, তখন কলম শাণিত করে লেখকরা উচ্চারণ করেন প্রতিবাদের ভাষা। এর মাধ্যমে লেখকরা ন্যায়বোধ প্রতিষ্ঠা করতে চান, দূরীভূত করতে চান অন্ধকার। তবেই শহিদদের রক্তের বিনিময়ে বহু দাম দিয়ে পাওয়া এই বাংলাদেশ হবে বিশ্বের বুকে সত্যিকার অর্থে একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ঢাকা সাব- এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) প্রথমবারে মতো আয়োজিত ‘লেখক সম্মাননা-২০২২’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০০৪ সালের বোমা হামলায় আমাদের খুলনার মানিক সাহা নিহত হয়েছিলেন। তিনিই তো সাংবাদিক জগতের দৃষ্টান্ত। সত্য প্রকাশের জন্য তিনি বাধা পেয়েও আপসহীন ভূমিকা পালন করেছিলেন। এমন ১৫-২০ জন সাংবাদিককে একটি সরকারের (বিএনপি) আমলে জীবন দিতে হয়েছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র আরও বলেন, এত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সাংবাদিকরা যে আর্থিকভাবে ভালো আছেন সেটাও জোর গলায় বলা যাবে না। আমরা যারা রাজনীতি করি, নিঃসন্দেহে তাদের বেশির ভাগই সংবাদপত্রসহ টিভি চ্যানেলগুলোর ওপর নির্ভর করি। আমরা সাংবাদিকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করি।

দেশে কেমন সাংবাদিকতা চলছে তার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আধুনিক, সভ্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যে কয়টি কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে থাকে তার মধ্যে সাংবাদিকতা একটি মাধ্যম। এই সংবাদপত্রের মাধ্যমেই রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের খবর আমরা জানতে পারি। অনেক সময় দেখা যায়, কোনো একটি বিষয়ে সাংবাদিক লিখতে চেয়েছেন। কিন্তু তার অফিস তা নিষেধ করেছে। বিশেষ করে যখন তখন বিশেষ জায়গা থেকে এ সকল বিষয় সংগ্রহ করা হয় তখন বলে দেওয়া হয়, এতটুকু লেখা যাবে, আর এতটুকু দেখানো যাবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখনই বিদেশ সফর থেকে আসেন, তার পরপর তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে সাংবাদিকদের সকল প্রশ্নের জবাব দেন। খুব কম দেশের প্রধানমন্ত্রী আছেন, যারা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

সাব এডিটরস কাউন্সিল আয়োজিত লেখক সম্মাননা অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে লিটন বলেন, আমার বিশ্বাস সাব এডিটরস কাউন্সিলের সামনের অনুষ্ঠানে আরও বেশি লেখা পাওয়া যাবে। এই ধরনের অনুষ্ঠান নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

অনুষ্ঠানে কবিতা, ইতিহাস/গবেষণা, গল্প/উপন্যাস, অনুবাদ, শিশুসাহিত্য, ভ্রমণ/বিজ্ঞান ক্যাটাগরিতে মোট ৯৬ জনকে লেখক সম্মাননা দেওয়া হয়। এর মধ্যে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে ৫০ জনকে।

বিশেষ সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন—

কবিতা: অতনু তিয়াস, আলমগীর নিষাদ, সুরাইয়া ইসলাম। অন্যরা হলেন কবি পুলক হাসান, আব্দুর রহমান মল্লিক, মু আ কুদ্দুস, মোহসিন হোসাইন, চৌধুরী ফেরদৌস, দীপক ভৌমিক।

গল্প/উপন্যাসে: শান্তনু চৌধুরী, ইমন চৌধুরী, লাবণ্য লিপি, কামাল হোসেন টিপু, রনি রেজা। অন্যরা হলেন সাবিরা ইসলাম, আবুল হোসেন খোকন, তানভীর আলাদীন, হোসন শহীদ মজনু, ইব্রাহীম খলিল জুয়েল, শামীম ফেরদৌস,সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, মাহমুদুল হক জাহাঙ্গীর, সাইফ বরকতুল্লাহ।

ইতিহাস গবেষণায়: কাজী আলিম উজ জামান, দীপংকর গৌতম, মুস্তফা মনওয়ার সুজন, মোহাম্মদ নূরুল হক, অঞ্জন আচার্য। সম্মাননাপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন কায়কোবাদ মিলন, আহমেদ মতিউর রহমান, মুতাছিম বিল্লাহ, রীতা ভেীমিক, জাকির আবু জাফর, শরীফ আব্দুল গোফরান।

শিশুসাহিত্যে: আশিক মুস্তাফা, অদ্বৈত মারুত, মনসুর হেলাল। অন্যজন হলেন মামুন রশিদ।

অনুবাদ: প্রমিত হোসেন, সাহাদত হোসেন খান, মলয় পাঁড়ে।

ভ্রমণ/বিজ্ঞান: আসিফ, জাহাঙ্গীর সুর, সুমন ইসলাম, কাজী রফিক।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইসির লেখক সম্মাননা-২০২২ এর উপদেষ্টা সম্পাদক মামুন ফরাজী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর।

ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি) লেখক সম্মাননা জুরি বোর্ডের দায়িত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. গিয়াস শামীম, কবি প্রাবন্ধিক-গবেষক মজিদ মাহমুদ, কথাসাহিত্যিক ড. হাসান অরিন্দম, কবি ও গবেষক আমিনুল ইসলাম, কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার।

নির্বাহী কমিটিতে (জুরি) ছিলেন মামুন ফরাজী, আনজুমান আরা শিল্পী, আবুল হাসান হৃদয়, লাবিন রহমান, মনির আহমাদ জারিফ, মামুনুর রশিদ মামুন, জাফরুল আলম, হালিমা খাতুন, আরিফ আহমেদ, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান আহমেদ।

লেখক সম্মাননা উপ-কমিটিতে ছিলেন কবীর আলমগীর, শিবলী নোমানী, প্রতীক মাহমুদ, নাজিম উদ দৌলা সাদী, মো. নঈম মাশরেকী।

লেখক,সাংবাদিক
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত