৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থীর প্রস্তাব দিল ঐকমত্য কমিশন
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৮:৩৮ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদের বিদ্যমান ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন বহাল রেখে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মোট আসনের অন্তত ৭ শতাংশে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনে এই সংশোধিত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো দল যদি ১০০ আসনে প্রার্থী দেয়, তবে সেখানে অন্তত ৭ জন নারী প্রার্থী রাখতে হবে। আর যদি ৩০০ আসনে অংশ নেয়, তাহলে কমপক্ষে ২১ জন নারীকে মনোনয়ন দিতে হবে।
নতুন এই প্রস্তাব অনুযায়ী, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় প্রয়োজনীয় সংশোধন এনে ৫০টি সংরক্ষিত আসন বহাল রাখা হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে ১৪তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকেই নারী মনোনয়ন বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এর আগে ১৪ জুলাই কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, কোনো দল যদি ২৫টির বেশি আসনে মনোনয়ন দেয়, সেখানে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রার্থী দিতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করায় তা পরিবর্তন করা হয়। পরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রস্তাব দেন, যেখানে তিনি সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়নের পরামর্শ দেন। কমিশনের আজকের বৈঠকে সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতেই সংশোধিত সুপারিশ পেশ করা হয়।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, ১৪তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিতে হবে। পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে প্রতি সাধারণ নির্বাচনে এ হার ৫ শতাংশ হারে বাড়িয়ে ১০০ জন নারীকে সরাসরি নির্বাচিত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলো পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে।
নারী আসনে সরাসরি ভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত রয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোটের কথা বলা হলেও বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। অন্যদিকে সিপিবি, বাসদ ও জেএসডি নারী আসনে সরাসরি ভোটের পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াতসহ ইসলামী দলগুলো ভোটের অনুপাতে নারী আসন বণ্টনের পক্ষে মত দিলেও বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক জোট বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০ আসনেই সন্তুষ্ট থাকার কথা জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনীতে সংরক্ষিত ৫০ নারী আসনের মেয়াদ আরও ২৫ বছর বাড়িয়ে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত বহাল রাখা হয়েছে।
