হাইকোর্টের রায় বহাল, খালাস পেলেন তারেক রহমান-বাবর
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে তারেক রহমান ও বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান এবং অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। বিএনপির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ একাধিক আইনজীবী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা। ওই ঘটনায় নিহত হন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন এবং আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটি ছিল এক বিভীষিকাময় অধ্যায়, যা আজও নাড়া দিয়ে যায় দেশবাসীকে।
ঘটনার পর মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। শুরু থেকেই তদন্ত নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। ২০০৭ সালের এক-এগারো পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নতুন করে তদন্ত শুরু করে সিআইডি এবং ২০০৮ সালে ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে অধিকতর তদন্ত করে আরও ৩০ জনকে আসামি করা হয়, যার মধ্যে ছিলেন তারেক রহমানও।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মামলার রায় দেয়। এতে বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দিয়ে সব আসামিকে খালাস দেন। রায়ে বলা হয়, মামলার তদন্ত পর্যাপ্ত ও নিরপেক্ষভাবে হয়নি, ফলে ন্যায়বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। আদালত নতুন করে পেশাদার সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের সুপারিশ করে।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। দীর্ঘ শুনানির পর আপিল বিভাগ আজ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার ঘোষণা দিল। এর মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামিদের খালাসের বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ পেল।
