অনলাইন সংস্করণ
২১:৫৯, ০২ নভেম্বর, ২০২৫
জাতীয় চিড়িয়াখানাকে শুধু রাজস্ব কিংবা বিনোদনের মানদণ্ডে বিচার করা উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, চিড়িয়াখানা দেশের বিশেষ পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে। তবে বর্তমানে চিড়িয়াখানায় প্রাণীগুলোর প্রতি মানবিক আচরণ করা হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের হলরুমে ‘বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার বর্তমান অবস্থা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, চিড়িয়াখানা যে সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তার সমাধান কোনো একক ব্যক্তি, এমনকি মহাপরিচালক বা পরিচালক একা চাইলে করাও সম্ভব নয়। কারণ এই সমস্যা বহু বছর ধরে চলছে। তাই অধিদপ্তর, চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকের আলোচনায় অনেক মূল্যবান পরামর্শ পাওয়া গেছে যা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করলেও পাওয়া যেত না। আগামীতে এমন একটি কমিটি করা হবে যেখানে সব শ্রেণির অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রয়োজনে প্রতি মাসে বৈঠক করে চিড়িয়াখানার উন্নয়ন পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, প্রাণী সংরক্ষণ পরিকল্পনা শুধু চিড়িয়াখানার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়। কোন প্রাণীকে উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে স্থানান্তর করা যায় কি না সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে। যেসব প্রাণীর স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে তাদের চিড়িয়াখানায় রাখা হবে কি না বা অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হবে কি না সে বিষয়েও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান চিড়িয়াখানার প্রাণীদের নিয়ে গবেষণার আগ্রহ প্রকাশ করে। কিন্তু গবেষণার জন্য প্রাণী বাইরে পাঠানো হবে না। গবেষকদের চিড়িয়াখানায় এসে সেখানকার পরিবেশেই গবেষণা করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সংকট হলো প্রাণীগুলোকে যেভাবে রাখার প্রয়োজন তা করা যাচ্ছে না, যার মূল কারণ জনবলের ঘাটতি। কর্মশালা থেকে পাওয়া প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার। মূলপ্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর ডা. এ বি এম শহীদ উল্লাহ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।