পরকীয়ার জেরে খুন হন আশরাফুল, খণ্ডিত মরদেহ মেলে ড্রামে

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৮ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে ড্রাম থেকে ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের ২৬ টুকরো লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এবার নতুন তথ্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে দুটি নীল রঙের ড্রামে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এমন নৃশংস হত্যার ঘটনায় তার বন্ধু জরেজ মিয়া ও তার বান্ধবী শামীমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ডিবি পুলিশ বলছে, আশরাফুলকে হত্যার পর লাশের সঙ্গে একই বাসায় অন্তত ‘২৪ ঘণ্টার বেশি’ লাশ কী করবেন তা নিয়ে পরিকল্পনা করেন জারেজুল ইসলাম ও শামীমা। একপর্যায়ে দুজনে সিদ্ধান্ত নেন, লাশ টুকরো করে ড্রামের মধ্যে নিয়ে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবেন। এমনভাবে কাজটি করবেন যেন কেউ বুঝতে না পারে। সে অনুযায়ী দা দিয়ে লাশ ২৬ টুকরো করে ড্রামে ভরে হাইকোর্টের সামনে ফেলে যায়। পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

জানা গেছে, শামীমা আক্তার নামে বিবাহিত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন আশরাফুল ও জরেজ। এ নারীর সঙ্গে দুজনের ছিল ত্রিভুজ প্রেম। কিন্তু এই প্রেম তাদের বন্ধুত্বে ফাটল তৈরি করেছিল। যার জেরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় আশরাফুলকে।

ডিবি সূত্রে আরও জানা গেছে, শামীমা আক্তার কুমিল্লার বাসিন্দা। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। শামীমার স্বামী সৌদি আরবে থাকেন। তিন বছর আগে ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে তার সম্পর্ক হয় মালয়েশিয়া প্রবাসী জরেজুল ইসলামের সঙ্গে। ছুটিতে দেশে ফেরার সময় শামীমার সঙ্গে জরেজুলের শারীরিক সম্পর্কও হয়।

ঘটনা সম্পর্কে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম গণমাধ্যমকে জানান, আশরাফুল হক মঙ্গলবার বাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন। বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার কথা হয়। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি।’

তিনি আরও জানান, ভারত ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ এবং আলু আমদানি করতেন নিহত আশরাফুল হক। পণ্য আমদানির জন্য তার সরকারি লাইসেন্স রয়েছে।

আশরাফুলের বাবা আব্দুর রশিদ জানান, ১১ নভেম্বর রাত ৯টায় বন্ধু পাশের গ্রামের জরেজকে নিয়ে ঢাকায় যান আশরাফুল হক। জরেজ মালয়েশিয়ায় থাকতেন। কিছুদিন আগে বাংলাদেশে আসেন। এরপর জাপানে যাওয়ার জন্য আশরাফুলের কাছে ২০ লাখ টাকা ধার চান। 

তিনি বলেন, ‘ব্যবসার কারণে ঢাকায় অনেকের সঙ্গে আমার ছেলের লেনদেন আছে। সেখান থেকে টাকা নিয়ে জরেজকে দিতে তাকেই সঙ্গে নিয়ে যায় আশরাফুল। কিন্তু যাওয়ার পর থেকে আর কোনো কথা হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লাশের খবর আসে। আমার ছেলে মরল, কিন্তু জরেজ তো বেঁচে আছে। তাকে ধরলেই সব পরিষ্কার হবে।’ 

 

আবা/এসআর/২৫