শেখ হাসিনার রায় সোমবার, লাইভ দেখবে সারা বিশ্ব
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:১২ | অনলাইন সংস্করণ

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আগামীকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল রায় ঘোষণা করবেন।
এ মামলার রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), রয়টার্স এবং ট্রাইব্যুনালের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ।
এছাড়া ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে বড় স্ক্রিনে লাইভ সম্প্রচারের আয়োজন করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে এবং মৃত্যুদণ্ডের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি এবং এটি বিবেচনায় কোনো অনুকম্পা প্রযোজ্য নয়। দণ্ডিত হলে ট্রাইব্যুনালের সাজা পরোয়ানা ইন্টারপোলে পাঠানো হবে।
গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়ে প্রথম মামলা হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের ১৬ মার্চ এই মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগগুলোতে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ উল্লেখ করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর আসাদুজ্জামান খান, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সশস্ত্র দল দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে দেড় হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয় এবং প্রায় ২৫ হাজার আহত হন।
এছাড়া অভিযোগ করা হয়, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি এই নির্দেশ কার্যকর করেছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্যান্য ঘটনায় রংপুর, ঢাকার চানখাঁরপুল ও আশুলিয়ায় নিরীহ-নিরস্ত্র ব্যক্তিদের হত্যার সঙ্গে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান ও মামুনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
প্রসিকিউশন গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করে, যা মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দতালিকা ও প্রমাণাদি ৪ হাজার পাঁচ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠা অন্তর্ভুক্ত। ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয় এবং ১০ জুলাই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।
এরপর সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে সাক্ষ্য দেন। গত ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সমাপনী বক্তব্য দেন এবং সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করেন। তিনিও শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি চান।
