চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাতবরণকারী ১১৪ অজ্ঞাত শহীদের পরিচয় শনাক্ত করতে রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করা শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকালে রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন কবরস্থানে শহীদদের মরদেহ তোলা শুরু হয়।
পরে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিআইডি’র প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেন, এই কবরস্থানে যারা নাম–পরিচয়হীন অবস্থায় শুয়ে আছেন, তাদের পরিচয় তখন যাচাই–বাছাই করা হয়নি। তাদের পরিচয় উদঘাটন করা জাতির প্রতি আমাদের একটি দায়িত্ব। আজ সেই মহান কাজের সূচনা হলো।
তিনি জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার (ওএইচসিএইচআর) মাধ্যমে আর্জেন্টিনা থেকে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার ঢাকায় এসে পুরো কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি গত ৪০ বছরে ৬৫টি দেশে এ ধরনের অপারেশন পরিচালনা করেছেন।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে জানিয়ে সিআইডি প্রধান বলেন, এ ব্যাপারে অজ্ঞাত শহীদদের পরিবার আবেদন করেছে। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে এ সব কাজ পরিচালিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করে কবরস্থান থেকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য লাশ উত্তোলন করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, লাশ শনাক্তের জন্য ইতোমধ্যে ১০ জন আবেদন করেছেন। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এখানে শহীদের সংখ্যা ১১৪ জনের বেশি। প্রকৃত সংখ্যা লাশ উত্তোলনের পর জানা যাবে।
ছিবগাত উল্লাহ বলেন, লাশগুলোর পোস্টমর্টেম করা হবে এবং ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে। পরে ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করে ধর্মীয় সম্মান বজায় রেখে পুনঃদাফন করা হবে।
শহীদদের পরিচয় শনাক্ত হলে, পরিবার চাইলে লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ডিএনএ সংগ্রহের পর, যে কেউ আবেদন করলে সহজেই শনাক্ত করা যাবে। সিআইডি’র হটলাইন নম্বরগুলো জানিয়ে দেওয়া হবে, যাতে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারেন।
এ সময় ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের (ইউএনএইচআর) সহযোগিতায় আগত আর্জেন্টিনার আন্তর্জাতিক ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার বলেন, আমি গত ৩ মাস ধরে সিআইডি’র সঙ্গে কাজ করছি। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। কাজগুলো আন্তর্জাতিক ফরেনসিক মানদণ্ড অনুসরণ করেই সম্পন্ন হবে বলেও জানান তিনি।
