‘অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত জরুরি’

প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:০১ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশের শ্রম বাজারে অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের সংখ্যা অত্যধিক হলেও অধিকাংশই স্বীকৃতি বা সুরক্ষার বাইরে রয়েছেন।

আজ বিকালে তেজগাঁওয়ের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত ‘অনানুষ্ঠানিক প্রান্তিক আনুষ্ঠানিক খাতের নারী শ্রমিক সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নারী চা শ্রমিক জোট, গৃহকর্মী জাতীয় ফোরাম, নারী গৃহভিত্তিক তৈরি পোষাক শ্রমিক নেটওয়ার্ক এবং নারী মৎস্য শ্রমিক নেটওয়ার্ক।

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ৮৫ শতাংশ। এর ফলে তারা অধিকাংশ অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকেন।

তিনি বলেন, চা শ্রমিক, মৎস্যজীবী বা গৃহশ্রমিকদের অবদান ছাড়া দেশের অর্থনীতি চলবে না। তবে অর্থনীতিবিদরা সাধারণত শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক খাতের দিকে নজর দেন এবং অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকদের অবদানকে উপেক্ষা করেন। এর ফলে তাদের অবদান জানা যায় না এবং স্বীকৃতিও প্রদান করা হয় না।

তিনি আরও বলেন, নেতৃত্ব গঠন একটি একক প্রক্রিয়া নয়, এটি সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে গড়ে ওঠে। নারীরা সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে শোষণের শিকার। নারী শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা কেবল তাদের স্বার্থে নয়, জাতীয় উন্নয়নের জন্যও অত্যন্ত জরুরি।

তিনি যোগ করেন, শ্রমিকদের নিয়ে যখন আমরা কথা বলি, তখন বঞ্চনার কথাই সামনে আসে। বাস্তবে তাদের জন্য নেই কোনো স্বীকৃতি, নেই অধিকার। তারা যে পরিমাণ পরিশ্রম করে এবং শোষণের শিকার হয়, তার বিনিময়ে প্রাপ্যটুকুও পায় না।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কর্মজীবী নারী সংগঠনের অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সুনজিদা সুলতানা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের সাবেক প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, চা বাগান থেকে মৎস্য খাত—আমাদের সম্মিলিত শক্তিই স্বীকৃতি ও ন্যায়ের পথ খুলে দেয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় নারী শ্রমিকদের উপস্থিতি জরুরি, কারণ দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ডই তারা।

অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ দামলে বলেন, নারীরা যখন সংগঠিত হয়, কথা বলে এবং নেতৃত্ব দেয়, তখন কী কী সম্ভব হয় তার শক্ত প্রমাণ এই কনভেনশন। উন্নয়নের পথচলায় অনানুষ্ঠানিক নারী শ্রমিকদের অধিকার, মর্যাদা ও নেতৃত্ব নিশ্চিত করতেই হবে।

প্যানেল আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন প্রাগ্রসর'র নির্বাহী পরিচালক ফওজিয়া খন্দকার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সভাপতি তাসলিমা আখতার, গৃহকর্মী নেত্রী ফারহিন আখতার খুশি, শ্রম আদালত বার অ্যাসোসিয়েশন ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট শারমিন সুলতানা মৌসুমি, অক্সফাম ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর শাহাজাদি বেগম এবং বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক এ কে এম আশরাফ উদ্দিন।

উল্লেখ্য, চা বাগান, মৎস্য, গৃহশ্রম ও ঘরে বসে পোশাক উৎপাদনসহ বিভিন্ন খাতের নারী শ্রমিকরা আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে একত্রিত হয়ে National Non-unionised Women Workers Forum গঠনের ঘোষণা দেন।