সনদে হাসিনার নাম নেই, মেনে নেওয়া যায় না: ইসলামী আন্দোলন

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ২১:১৯ | অনলাইন সংস্করণ

জুলাই সনদের খসড়া সম্পর্কে তীব্র সমালোচনা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, খসড়াটি ‘দুর্বল, আইনগতভাবে বাধ্যতাবিহীন এবং পতিত স্বৈরাচারের প্রতি নমনীয়’ একটি দলিল। তার মতে, খসড়ায় একবারের জন্যও শেখ হাসিনার নাম না থাকা অগ্রহণযোগ্য, কারণ ‘ফ্যাসিবাদের মূলহোতা এবং নৃশংসতা চালানোর নেতৃত্ব তিনিই দিয়েছেন।’

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নিয়মিত বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

খসড়াটি পড়ে তার মনে হয়েছে, এটি বাস্তবতা বিবর্জিত এবং এতে ফ্যাসিবাদের নির্মমতা ও বিভীষিকার যথাযথ প্রতিফলন নেই।

মাওলানা ইউনুস বলেন, সাম্প্রতিক ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে সরাসরি হত্যার নির্দেশ দিতে শোনা গেছে- এমন অভিযোগও উঠেছে। তারপরও সনদে তার নাম না থাকা প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি দাবি করেন, সনদের খসড়ায় ‘পতিত ফ্যাসিবাদ’ শব্দবন্ধটি গৎবাঁধা এবং এর মাধ্যমে বাস্তবতার চিত্র চাপা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই সনদে আইনি মর্যাদা বা বাধ্যবাধকতার কোনো উল্লেখ নেই, যা মূল দাবি ছিল। ‘যথাযোগ্য স্বীকৃতি’ শব্দটি আপেক্ষিক এবং যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যার সুযোগ রাখে। কিন্তু জুলাইয়ের তাৎপর্য আপেক্ষিক নয়, এটি রক্তাক্ত বাস্তবতা। এছাড়া, সনদে অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়েও কোনো নিশ্চয়তা নেই। ফলে ভবিষ্যতে অভ্যুত্থানের নায়কদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অভিযোগ করেন, অংশগ্রহণকারী শক্তি, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অবদান এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের নামও খসড়ায় উপেক্ষিত। এতে করে ঐসব দোসরদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের পথ সহজ হবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

বৈঠকে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ দীর্ঘ দেড় দশক ধরে যে স্বৈরতন্ত্রের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে, তার প্রধান দায়ভার ভারতের। কিন্তু খসড়া সনদে ভারতের ব্যাপারে রহস্যজনক নীরবতা দেখা যাচ্ছে, যা গভীর উদ্বেগজনক। সামগ্রিকভাবে সনদটি দুর্বল, আইনি শক্তিহীন এবং স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামের ইতিহাস ও নির্মম বাস্তবতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছে।

বৈঠকে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, যুগ্ম মহাসচিব শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহকারী মহাসচিব আহমাদ আবদুল কাইয়ুমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।