‘দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যদের দিয়ে যেন ভাড়াটে খুনির কাজ আর করা না হয়’—এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রায় ৮ বছর আয়নাঘরে বন্দী থাকা জামায়াতের প্রয়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম আরমান।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে সকালে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে তাদের ট্রাইব্যুনাল থেকে ঢাকা সেনানিবাসের সাবজেলে নেওয়া হয়।
ব্যারিস্টার আরমান বলেন, একজন ভুক্তভোগী হিসেবে আমার আশাবাদ যে, দেশপ্রেমিক সেনা সদস্যদের দিয়ে যেন ভাড়াটে খুনির কাজ আর করা না হয়। জনগণের রক্ষক সেনাবাহিনীকে আর কোনোদিন যেন জনগণের মুখোমুখি করা না হয়। আমাদের সার্বভৌমত্বের রক্ষক সেনাবাহিনী যেন আর কোনোদিন কোনও শক্তির পুতুল না হয়ে যায়, সেটা এই বিচারের মাধ্যমে নিশ্চিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, সেনানিবাসের ভেতরে ঘোষিত সাবজেলে জেল কোড সঠিকভাবে অনুসরণ হচ্ছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। বিশেষ করে তারা কি কোনোভাবে সার্ভিং সেনা সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করছে কিনা, এটি নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। যদি না হয় আমরা যারা ভুক্তভোগী ও সাক্ষী আছি, আমাদের জীবনের হুমকি আশঙ্কা থাকবে।
ব্যারিস্টার আরমান বলেন, আসামিরা গ্রেপ্তার অবস্থায় ক্যান্টনমেন্টে (সেনানিবাস) অবস্থানকালে বিচারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে তা খুবই আতঙ্কজনক বিষয় হবে। তাই জেল কোড সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে।
সামরিক কর্মকর্তাদের দেশত্যাগে উচ্চপদস্থ কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যখন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা দেশ ত্যাগ করেছেন, তখন তাদের পাসপোর্ট বাতিল ও ওয়ারেন্ট ছিল। এ অবস্থায় ক্যান্টনমেন্টের ভেতর থেকে কিভাবে তারা দেশত্যাগ করল—এ ব্যাপারে একটি উচ্চপদস্থ কমিশন গঠন করার আহ্বান জানাচ্ছি।
ব্যারিস্টার আরমান আরও বলেন, এ ছাড়া যারা ওই সময় কর্মরত ছিলেন তাদের হাতে কি আমাদের সার্বভৌমত্ব নিরাপদে রয়েছে কি না। তাই একজন ভুক্তভোগী হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যে, যারা দায়িত্বরত ছিল বা যাদের তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় দেশত্যাগ করেছে তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। কেননা যাদের বিচার হচ্ছে এবং যারা দেশত্যাগ করেছে তারা যেন কোনোভাবে এই বিচারকে প্রভাবিত করতে না পারে।
