
একটা গোষ্ঠী বাংলাদেশে ধর্মের নামে বিভাজনের পথ সৃষ্টি করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশের মানুষ ধর্মভীরু, ধর্ম মেনে চলে। কিন্তু বিএনপি ধর্ম দিয়ে রাষ্ট্র বা সমাজের বিভাজনে বিশ্বাস করে না।
রোববার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে, ২৪–এর জুলাই গোটা বাংলাদেশের মানুষের মন-মানসিকতায় এবং তরুণ সমাজের মন-মানসিকতায় অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। এখন সবাই পরিবর্তন চায়। পরিবর্তন সর্বক্ষেত্রে চায়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে চায়, আমাদের চিন্তাভাবনার মধ্যে চায়। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই।
তিনি আরও বলেন, এই চিন্তাটি সবার মধ্যে এসেছে এবং এসেছে এই উপলব্ধি থেকেও যে— সেই পুরোনো রাষ্ট্রকাঠামো আর উপযোগী থাকছে না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা উপযোগী থাকছে না, বিচারব্যবস্থা উপযোগী থাকছে না। রাষ্ট্রের উন্নয়নের যে বিষয়গুলো আমরা এতদিন যেভাবে চিন্তা করেছি, সেগুলো পিছিয়ে পড়েছে। সেগুলো দিয়ে কাজ হচ্ছে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে তার দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা, দেশকে গড়ে তোলা— এই চিন্তা আমাদের নেতা তারেক রহমানকে আলোড়িত করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের ছেলেরা অনুভব করে—পাস করে চাকরি নেই। এই ১৫ বছরে তো চাকরি পাওয়াই যায়নি। সব জায়গায় ভরাট আওয়ামী লীগের দুঃশাসন। কিন্তু নতুন বাংলাদেশে আমরা কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করবো?
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৮ মাসে এক কোটি কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে। শুধু চাকরি নয়, ব্যবসা, কৃষিকাজ, শ্রম- সব মিলিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। কীভাবে করা হবে তা এরইমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। এই পরিকল্পনা প্রমাণ করে বিএনপি একটি অ্যাডভান্স রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের যা কিছু ভালো অর্জন হয়েছে তা অতীতে বিএনপিই করেছে। আবার নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার ব্যাপারেও বিএনপি নতুন চিন্তাভাবনা সামনে নিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক। দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশ, একদলীয় শাসন থেকে তিনি বহুদলীয় ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। আধুনিক রাজনৈতিক দল গঠনের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। তার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শন বাংলাদেশের মূল ভিত্তি রচনা করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া, ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, মিডিয়ার স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা— সবই জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন। আজকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তিও তিনি নির্মাণ করেছিলেন। প্রবাসী শ্রমিকের রেমিট্যান্সের পথও তিনিই খুলেছিলেন।