তারেক রহমানকে স্বাগত জানাবেন ‘৫০ লাখ’ মানুষ
প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমিরুল ইসলাম অমর

রাত পোহালেই দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ দেড়যুগ পর তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় করে রাখতে নেওয়া হচ্ছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি। ৩০০ ফিটে গণসংবর্ধনার জন্য বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বুলেট প্রুফ গাড়ি। নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে সব আয়োজন। দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে এদিন লাখ লাখ লোকের সমাগম হবে। তারেক রহমান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর সেখানের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ৩০০ ফিটের গণসংবর্ধনা স্থলে আসবেন। এরপর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেখান থেকে গুলশানের বাসায় যাবেন। শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাসায় ফেরা পর্যন্ত দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে বনানী ও কাকলী হয়ে সরাসরি সংবর্ধনা মঞ্চে উঠবেন তারেক রহমান। এই প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করতে ৩০০ ফিট এলাকা সংলগ্ন মহাসড়কে নির্মাণ করা হচ্ছে বিশাল সংবর্ধনা মঞ্চ। দিন-রাত কঠোর পরিশ্রমে ব্যস্ত শ্রমিকরা। গত রোববার দুপুর থেকেই মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। মঞ্চ হচ্ছে ৪৮-৩৬ ফিট। সংবর্ধনা কমিটির সদস্যরা দিন-রাত তদারকি করে আয়োজনকে পূর্ণতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আজ বুধবারের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হবে। দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতারা প্রতিদিন খোঁজখবর রাখছেন। সমাবেশ ঘিরে মঞ্চ প্রস্তুতের পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুরো এলাকাজুড়ে মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৫০ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও অভ্যর্থনা কমিটির সদস্য সচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় নির্মিত অভ্যর্থনা মঞ্চ পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান আসবেন। আজকেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিভিন্ন জেলা থেকে লোক আসা শুরু হয়েছে। সুতরাং ২৫ ডিসেম্বর এখানে মানুষের মহামিলন ও মহামেলায় পরিণত হবে। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। যে জনসমাগম হবে তাদের সংবর্ধনা নেওয়ার পর তার মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যিনি দীর্ঘদিন নিপীড়ন নির্যাতন সহ্য করেছেন, আজকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাকে দেখে তিনি বাসায় যাবেন। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার প্রথম দায়িত্ব সরকারের, এরপর দলের। এদিকে দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে বিএনপির সর্বস্তরে আনন্দের জোয়ার বইছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘনিয়ে আসায় তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ও উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। গতকাল সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড হাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা মঞ্চ পরিদর্শনে আসতে দেখা গেছে। তারা জানান, নেতাকে বরণ করে নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ সময় মঞ্চের সামনে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও টহল দিতে দেখা যায়। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দফায় দফায় গাড়িতে করে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন টিম মঞ্চ এলাকা পরিদর্শন করছে।
জানা যায়, তারেক রহমানের সঙ্গে স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানও ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন। তারা লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে ঢাকায় আসবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আব্দুস সাত্তার এ তথ্য জানিয়েছেন।
বগুড়া থেকে ঢাকায় যাবেন অর্ধ লক্ষাধিক নেতাকর্মী, প্রস্তুত ৫০০ বাস : আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে তার নিজ জেলা বগুড়া থেকে ঢাকাগামী বাস ও অন্যান্য যানবাহনে করে নেতাকর্মীরা ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। এ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই বগুড়া জেলায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। দলীয় সূত্র জানায়, বগুড়া সদরসহ শিবগঞ্জ, গাবতলী, ধুনট, শেরপুর, সারিয়াকান্দি ও শাজাহানপুরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ঢাকাগামী প্রায় ৫০০টি বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেক নেতাকর্মী মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারে করে এরইমধ্যে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন।
রাজশাহী থেকে ঢাকায় যাবেন বিএনপির ৩৫ হাজার নেতাকর্মী : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রাজশাহী থেকে ৩৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় যাবেন। এ উপলক্ষে রাজশাহী থেকে ট্রেন, বাস, মাইক্রোবাস ও কার-এ করে ঢাকায় যাবেন নেতাকর্মীরা। যদিও রাজশাহী থেকে কোনো স্পেশাল ট্রেন না থাকলেও বিভিন্ন ট্রেনের অতিরিক্ত বগি লাগানোর কথা জানিয়েছে রেলওয়ে। তবে রাজশাহী বিএনপির একটি সূত্র বলছে, রাজশাহী মহানগর ও জেলা থেকে প্রায় ৩৫-৩৭ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন। দলীয়ভাবে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া অনেকে নিজে নিজে আলাদাভাবে ঢাকায় গিয়েছেন বা যাচ্ছে। একইভাবে অনেকে ট্রেনে যাবেন। রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসব বাসগুলো আগের দিন ও রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে।
পটুয়াখালী থেকে যোগ দেবেন ৫০ হাজারের বেশি নেতাকর্মী : তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পটুয়াখালী থেকে ৫০ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন বলে জানিয়েছে জেলা বিএনপি। গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান টোটন।
কক্সবাজার থেকে যোগ দেবেন ২০ হাজার নেতাকর্মী : আগামীকাল বৃহম্পতিবার দীর্ঘ ১৮ বছর পর দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তারেক রহমানের আগমনে জেলার বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মী যোগ দিবেন। জেলার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে স্বাগত জানানোর লক্ষ্যে ঢাকা অভিমুখে যাত্রার উদ্দেশে এরইমধ্যে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। সড়কপথে বিপুলসংখ্যক বাস ও মাইক্রোবাস ছাড়াও এ যাত্রায় থাকছে কক্সবাজার-ঢাকা রুটে বরাদ্দকৃত বিশেষ ট্রেন। জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী জানান, ২৫ ডিসেম্বর সকালে ঢাকায় তারেক রহমানের নির্ধারিত স্থলে কক্সবাজারের কমপক্ষে ২০ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন।
ঝালকাঠি থেকে লঞ্চণ্ডবাসে ঢাকায় যাবেন বিএনপির ২০ হাজার নেতাকর্মী : ১৭ বছর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঝালকাঠি থেকে প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী যোগ দেবেন। জেলা বিএনপি ও মনোনীত প্রার্থীদের উদ্যোগে স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আজ বুধবার সন্ধ্যায় ঝালকাঠি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে তিনটি বড় যাত্রীবাহী লঞ্চে ছেড়ে যাবে। এর আগে ২১ ডিসেম্বর থেকেই অনেকে নিজ নিজ উদ্যোগে ঢাকায় যাত্রা শুরু করেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
?তারেক রহমানকে বরণ করে নিতে নওগাঁয় প্রস্তুত ১০০ বাস : আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ঢাকায় যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০০টি বাসভাড়া করেছে নওগাঁ জেলা বিএনপি। এই ১০০টি বাসের মধ্যে সদর উপজেলা থেকেই ছেড়ে যাবে ২৫টি বাস। এছাড়া জেলার বাকি ১০টি উপজেলা ও দুইটি পৌরসভা থেকে আরও ৭৫টি বাস সেদিন ঢাকায় যাবে।
মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাবেন ২৫ হাজার নেতাকর্মী, প্রস্তুত ৪০০ বাস : দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাসজীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খবরে সারাদেশের মতো মানিকগঞ্জেও বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক-উদ্দীপনা। দলের শীর্ষ এই নেতাকে বরণ করে নিতে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি ও এর সব অঙ্গ-সংগঠনের অন্তত ২৫ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন। তাদের যাতায়াতের জন্য জেলার সাতটি উপজেলা ও দুটি পৌরসভা থেকে প্রায় ৪০০টি বাস ও মিনিবাস প্রস্তুত করা হয়েছে।
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যাবেন ৫০ হাজার নেতাকর্মী : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রায় ১৮ বছর পর দেশে প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে সারা দেশের মতো ফরিদপুর থেকেও ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জেলার সব ইউনিয়ন ও উপজেলা থেকে অন্তত ৫০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবে। জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর থেকে ঢাকায় যাত্রা শুরু হবে ২৪ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের মাঠ থেকে। পদ্মা সেতু পার হয়ে নেতাকর্মীরা সরাসরি রাজধানীর ৩০০ ফিট (পূর্বাচল রোড) এলাকায় নির্মিত বিশাল সংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হবেন।
বাস-ট্রেনে পাবনা থেকে ঢাকায় যাবেন বিএনপির ২৫ হাজার নেতাকর্মী : আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে পাবনা থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মী। যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রায় দুই শতাধিক বাস-মাইক্রোবাস ভাড়া করা হয়েছে। ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেন ভাড়া করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি ট্রেনের বগি বুকিং দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন পাঁচ হাজার বিএনপি নেতাকর্মী : তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। এ উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে পঞ্চগড় জেলা থেকে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ হাজার নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন বলে জানিয়েছেন দলীয় নেতারা। জেলা সদরসহ তেঁতুলিয়া, আটোয়ারী, বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে ঢাকায় যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। অনেক নেতাকর্মী ব্যক্তিগত উদ্যোগে আগেভাগেই ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি কিংবা বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছেন।
ঢাকায় যাচ্ছেন মাদারীপুরের ৩০ হাজার বিএনপি নেতাকর্মী : দলীয় প্রধানের আগমনকে ঘিরে প্রস্তুতি সভা করছেন মাদারীপুর জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বাস, মাইক্রোবাস ও ব্যান্ডপার্টি ভাড়া করাসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলাজুড়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। মাদারীপুর জেলার পাঁচটি উপজেলা থেকে তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ঢাকায় যাবেন ৩০ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী। এ জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় আড়াই শতাধিক বাস এবং অসংখ্য মাইক্রোবাস।
মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাবে ২৫ হাজার নেতাকর্মী : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুন্সীগঞ্জ থেকে প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেবেন বলে জেলা বিএনপির বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। নেতাকর্মীদের বহনের জন্য মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে দুই শতাধিকেরও বেশি বাস ভাড়া করা হয়েছে। তবে দলীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার দূরত্ব কম হওয়ায় বাসের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পরিবহনে করেও তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছাবেন। এছাড়া মুন্সীগঞ্জের অনেক নেতাকর্মী ঢাকা শহরে বসবাস করায় তারা ঢাকা থেকেই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে বিএনপির দলীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
খুলনা থেকে ঢাকায় আসবেন বিএনপির ১০ হাজার নেতাকর্মী : আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা জানাতে খুলনার ১০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবে। বাস, ট্রেন ও ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন নেতাকর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা এমন তথ্য জানিয়েছেন।
মাগুরা থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন ১০ হাজার নেতাকর্মী : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার মাগুরা জেলায় দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। জেলা সদরসহ শ্রীপুর, মহম্মদপুর ও শালিখা উপজেলার বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
খাগড়াছড়ি থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন ১০ হাজারের বেশি বিএনপি নেতাকর্মী : দীর্ঘ ১৮ বছর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে সারাদেশের মতো পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতেও বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসব ও উদ্দীপনা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে খাগড়াছড়ি জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। জেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, সড়কপথে বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে করে নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাবেন। এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে যাত্রার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
২০০৮ সালের পর থেকে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা পরিবারসহ লন্ডনে প্রবাসে অবস্থান করছেন। দীর্ঘদিন পর তার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতি ও আগামী জাতীয় নির্বাচনে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা ও তৃণমূলের কর্মীরা। তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতে জেলা থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গণসংবর্ধণা শেষে এভারকেয়ারে মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ : ৩০০ ফিটে গণসংবর্ধনা শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সেখান থেকে গুলশানের বাসায় যাবেন। শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে বাসায় ফেরা পর্যন্ত দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বুলেট প্রুফ গাড়ি প্রস্তুত : তারেক রহমানের নিরাপত্তায় বিএনপির কেনা বুলেট প্রুফ বাস দেশে এসেছে। বাসটি রোববার চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে। গত সোমবার এটি ঢাকায় পৌঁছেছে। এর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যবহারের জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করা বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন একটি ‘হার্ড জিপ’ গাড়ি দেশে পৌঁছে। টয়োটা, ল্যান্ড ক্রুজার, প্রাডো এলসি ২৫০ মডেলের এই গাড়িটি এরইমধ্যেই বিএনপি নামে নিবন্ধিত হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস অনুমোদন দিয়েছে।
শাহজালালে কাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টা দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা : বিশেষ কার্যক্রম ও নিরাপত্তাজনিত কারণে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ছাড়া অন্য দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের জারি করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। যাত্রীসেবা, নিরাপত্তা ও কার্যক্রমের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে বৈধ টিকিটধারী যাত্রী ছাড়া অন্য কোনো সঙ্গী বা দর্শনার্থী বিমানবন্দর এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেন না। এই সাময়িক বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে যাত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কাছে আন্তরিক সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দরে ২৫ ডিসেম্বর আগেভাগে পৌঁছাতে যাত্রীদের অনুরোধ বিমানের : আগামী ২৫ ডিসেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও এর আশপাশের সড়কে তীব্র যানজটের আশঙ্কায় হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে যাত্রীদের বিমানবন্দরে পৌঁছানোর অনুরোধ জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থাটি জানায়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ২৫ ডিসেম্বর শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা, গুলশান সংযোগ সড়ক এবং পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়েতে (৩০০ ফিট) ব্যাপক জনসমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে ওই দিন এলাকাগুলোতে বড় ধরনের যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় রুটের সম্মানিত যাত্রীদের অনাকাঙ্ক্ষিত ভোগান্তি এড়াতে বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে। যাত্রীরা যেন নির্ধারিত সময়ের বেশ আগেই বিমানবন্দরে পৌঁছানোর প্রস্তুতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। যাত্রীদের এই সহযোগিতা ওই দিনের ভ্রমণকে নির্বিঘ্ন, আনন্দদায়ক ও ঝামেলামুক্ত করতে সহায়তা করবে বলে আশা প্রকাশ করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
দেশের সব বিমানবন্দরে ড্রোন উড্ডয়ন নিষিদ্ধ : জাতীয় নিরাপত্তা এবং নিরাপদ বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দেশের সব বিমানবন্দর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ড্রোন উড্ডয়ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এক পত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
বেবিচকের পত্রে বলা হয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা, ২০২০ অনুযায়ী বিমানবন্দর ও সংলগ্ন এলাকায় অনুমোদনহীন ড্রোন উড্ডয়ন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও গত ১৯ ডিসেম্বর শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ বিমানবন্দরে গ্রহণ করার সময় তিনজন উপদেষ্টা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে কিছু ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিনা অনুমতিতে বিমানবন্দরে ড্রোন উড্ডয়ন করে ছবি ধারণ করে। এ ধরনের উড্ডয়ন বিমান চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকির সৃষ্টি করে।
এ অবস্থায় বিমানবন্দর ও সংলগ্ন এলাকায় ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধি ও সর্বসাধারণকে ড্রোন উড্ডয়ন না করার অনুরোধ জানিয়েেেছ বেবিচক। এদিকে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আগামী ২৫ ডিসেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা, বিমানবন্দর থেকে গুলশানগামী সড়ক এবং পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফিট সড়ক)-তে ব্যাপক জনসমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে তীব্র যানজট সৃষ্টি হতে পারে। এমতাবস্থায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের সব যাত্রীদের ওই দিন পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল। আপনাদের যাত্রা সুষ্ঠু, সুন্দর ও নির্বিঘ্ন হোক। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আরেক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, যাত্রীসেবা, বিশেষ নিরাপত্তা এবং অপারেশনাল শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিমানবন্দর এলাকায় নির্ধারিত যাত্রী ছাড়া সব সহযাত্রী-দর্শনার্থী প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমান গ্রেপ্তার হন। পরে ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্তি পান এবং চিকিৎসার জন্য ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনে পাড়ি জমান। সেই থেকে তিনি পরিবারসহ সেখানেই অবস্থান করছেন। লন্ডন থেকেই তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারান্তরীণ হওয়ার পর ২০১৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি লন্ডনে বসেই দলের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার তিনি দেশের মাটিতে পা রাখবেন, যার মাধ্যমে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে।
