প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ০৭ মে, ২০২২
নিজের আউটফিট সুন্দর দেখাতে নারী-পুরুষ সবাই চান। অবশ্য রূপচর্চা বা সৌন্দর্য চর্চায় তুলনামূলক নারীদের চেয়ে ছেলেরা অনেকটাই পিছিয়ে। কেউ কেউতো বলেই বসেন-ছেলেদের আবার রূপচর্চার কী আছে? তবে ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে পুরুষদেরও প্রসাধন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া জরুরি। আর নিয়মিত ত্বক চর্চায় ত্বক যেমন ভালো থাকে, তেমনি নিজেকেও সুন্দর দেখায়। অন্যদিকে ত্বকের রোগবালাই থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। সিনিয়র কনসালটেন্ট ও শহীদ সোহরাওয়ার্র্দী হাসপাতালের চর্ম ও যৌনব্যাধি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আহাম্মদ আলী বলেন, ত্বকের যতেœ নারী-পুরুষ সবাই কমবেশি প্রসাধনী ব্যবহার করি। তবে আমাদের উচিৎ ভালোমানের প্রসাধনী ব্যবহার করা। অনেক সময় দেখা যায় মানহীন বা সস্তা প্রসাধনী ব্যবহার করার ফলে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যার আবির্ভাব হয়। আর এ থেকে মুক্তির জন্য ভালোমানের প্রসাধনী ব্যবহার করা যেমন জরুরি, তেমনি ঋতু ও ত্বকের ধরন বুঝেও প্রসাধনী ব্যবহার করাটা প্রয়োজন। আর ত্বকে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াটাও জরুরি।
যারা নিয়মিত সেভ করেন তাদের জন্য সেভিং ক্রিম বা জেল ও সেভের পরে লোশন মাখাটা জরুরি। আর এ জরুরি কাজটা অনেকেই যেনোতেনোভাবে সেরে ফেলেন। ফলে অনেকের মুখের ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। ভালো হয় সেলুনে না গিয়ে বাসায় সেভ করা। আর সেভিং ক্রিম বা জেল ও সেইসঙ্গে আফটার লোশন মাখার ক্ষেত্রে ভালো ব্র্যান্ড ব্যবহার করাটা ভালো। বাজারে জিলেট, ডেনিম, নিভিয়া ম্যান, লরিয়েল, দ্য বডিশপসহ ইত্যাদি ব্র্যান্ডের সেভিং ক্রিম, জেল ও আফটার লোশন পাওয়া যায়।
যমুনা ফিউচার পার্কের একটি প্রসাধনী দোকান থেকে নিজের ব্যবহারের জন্য প্রসাধনী কিনেছেন মামুন হোসেন। তিনি সদ্য যোগ দিয়েছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হিসেবে। মামুন হোসেন বলেন, শুধু সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে গোসল আর মুখে একটু-আধটু ক্রিম মাখলেই ত্বকের যত্ন নেওয়া হয় না। কারণ ত্বকেরও নিজস্ব চাহিদা আছে ও সেটা সঠিকভাবে পূরণ করাটাও জরুরি। আর সে কারণে সেভের ক্ষেত্রে যেমন ভালোমানের ব্র্যান্ডের প্রসাধনী কিনি, তেমনি ফেসওয়াশ, বলিলোশন, ক্রিম বা সুগন্ধিটাও কিনি। আমার কাছে দেখতে কে সুন্দর, সেটা না ভেবে তিনি নিজেকে কতোটা পরিচ্ছন্ন রাখছেন বা নিয়মমাফিক ত্বকের প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করছেন সেটা প্রধান বিষয়।
নিয়মিত ফেসওয়াশ করলে মুখের ত্বকে জমে থাকা ধুলোবালি যেমন সরে যায়, তেমনি ত্বকের উজ্জলতাও বাড়ে। তবে এ ক্ষেত্রেও ভালোমানের প্রসাধনী ব্যবহার করটা উচিৎ। বাজারে নাফিল, লরিয়েল, ডোব ম্যান, নিভিয়া, গার্নিয়ার, হ্যাপি বার্ডথ, ম্যান কাভি জোলেন, ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি ম্যান, ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম, স্কিন ফেরাপি, অক্সি, দ্য বডি শপ, পন্ডসসহ নানা ব্র্যান্ডের ফেসওয়াস পাওয়া যায়।
চুলের যতেœ তেলের পাশাপাশি জেল বা ক্রিম ব্যবহার চুলের উজ্জলতা বাড়ায় এবং চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে। বাজারে নানা ব্র্যান্ডের চুলের জন্য জেল বা ক্রিম পাওয়া যাবে। এসব ব্র্যান্ডের মধ্যে আছে লরিয়েল, হিমালয়া, অলবারতো, গেটসবায়সহ ইত্যাদি।
পুরুষদের জন্য বাজারে লরিয়েল, গার্নিয়ারসহ নানা ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু নিতে পারেন। এছাড়া ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসাম, নিভিয়াসহ নানা ব্র্যান্ডের লোশন ও ক্রিম পাওয়া যাবে পুরুষদের জন্য। আর উডস্পাইস অ্যামবার, ইয়ার্ডলি জেন্টলম্যান ক্লাসিক, ইম্পেরিয়াল লেদারসহ নানা ব্র্যান্ডের পাউডার কেনা যাবে। এছাড়া বডিওয়াশ বা বাথশপ পাওয়া যাবে অলিভ বাথ, নিভিয়া, লরিয়েল, ডোবসহ নানা ব্র্যান্ডের।
মুখের ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাধারণত সবাই ক্লিনজিং, স্ক্রাবিং, ময়শ্চারাইজিং করেন। তবে মুখের ত্বক ঠিক রাখতে নারীদের মতো পুরুষরাও স্ক্রাবিং করতে পারেন। এতে ত্বকের কোষ ভেতর থেকে পরিষ্কার থাকে। আবার মরা কোষও দূর হয়। অন্যদিকে ফেসওয়াশ শুধু মুখের উপরিভাগের অংশ পরিষ্কার করে। কিন্তু স্ক্রাবিং মুখের ত্বকের লোমকূপগুলোর ভেতরের অংশও পরিষ্কার করে। আর শেভিং করার পর স্ক্রাবিং করলে পুরুষদের মুখের ত্বক আরও বেশি পরিষ্কার থাকে। রূপ বিশেষজ্ঞদের মতে ক্লিনজার করার চেয়েও স্ক্রাবিংয়ে ত্বক ভালো ও পরিষ্কার হয়। এছাড়া স্ক্রাবিংয়ের মাধ্যমে অ্যাকনে থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর অধিকাংশ স্ক্রাবারে স্যালিসিলিক এসিড থাকে। এটা অ্যান্টি-অ্যাকনের কাজ করে। সবচেয়ে ভালো দিক হলো নিয়মিত স্ক্রাবিং করলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না। চোখের নিচের কালিও পড়ে না। তবে প্রতিদিন স্ক্রাবিং করলে ত্বকে কোনো সমস্যা দেখা দিলে প্রতিদিন না করে সপ্তাহে ১ বা ২ দিন করতে পারেন।