ঢাকা শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ফ্যাশনে শাড়ি

নতুন প্রজন্মের অনেক মেয়ে আজকাল শাড়িতে নিজেকে সাজান। বিশেষ করে উৎসব-পার্বণ বা কোনো অনুষ্ঠানে যেতে শাড়িকে বেছে নেন। এতে সৌন্দর্যের পাশাপাশি ব্যক্তিত্বও ফুটে ওঠে। লিখেছেন- সুমাইয়া আক্তার
ফ্যাশনে শাড়ি

বর্তমান নারীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি ফ্যাশন সচেতন। বিশেষ করে প্রযুক্তির এ দুনিয়ায় কোথায় কোন ফ্যাশন চলছে তার খোঁজ অনেকেই রাখেন। আর তাই নিজেকেও আপডেট রাখতে থাকেন বিশেষ সচেতন। সে ধারাবাহিকতায় অনেক নারী, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মেয়েরা আজকাল শাড়িতেও নিজেকে উপস্থাপন করছেন। বিশেষ করে উৎসব-পার্বণ বা কোনো অনুষ্ঠানে যেতে শাড়িতে সাজান নিজেকে। এছাড়া শাড়িতে বাঙালি নারী যেমন বেশি সুন্দর, তেমনি শাড়ি শুধু ফ্যাশন নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতিরও অনুষঙ্গ। সব ছাপিয়ে শাড়ি আগেও যেমন বাঙালি নারীর চিরায়িত অনুষঙ্গ ছিল, তেমনি আজও আছে এবং প্রবীণদের পাশাপাশি নবীনরাও শাড়ি পড়ছেন নব সাজে।

বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী তাসনুভা বলেন, সালোয়ার-কামিজ বা টপস বেশি পরা হয়। তবে মাঝে-মধ্যে শাড়ি পরি। বিশেষ করে উৎসব বা কোনো অনুষ্ঠানে যেতে শাড়ি পরি। এটা পরতে ভালো লাগে। নিজেকে একটু বেশি সুন্দর দেখাতেও আমি মনে করি শাড়ির জুড়ি নেই।

ফ্যাশন ডিজাইনার ও মডেল নোশিন তাবাস্সুম বলেন, অন্য যে কোনো পোশাকের চেয়ে শাড়ির রয়েছে আলাদা একটা সৌন্দর্য, তেমনি এটি আভিজাত্যিক। তাই নিজেকে একটু ভিন্ন মাত্রায় উপস্থান করতে শাড়ির বিকল্প যেমন নেই, এটি বাঙালি নারীর মানানসই পোশাক। এছাড়া শাড়িতে যেভাবে একজন নারীর সৌন্দর্য ফুটে ওঠে, তা অন্য পোশাকে খুব একটা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে নারীর জন্য শাড়ি-ই সুন্দর।

শাড়ি পরার ক্ষেত্রে ঋতুকে প্রাধান্য দেওয়া হয় একটু বেশি। কারণ, সব ঋতুতে সব শাড়ি যেমন মানানসই নয়, তেমনি আরামদায়কও নয়। তাই গ্রীষ্মে যেমন সুতি জাতীয় শাড়ি আরামদায়ক, তেমনি বর্ষায় সিল্ক জাতীয় শাড়ি বেশ মানায়। আবার শীতের সময় কাতান বা একটু ভারী শাড়ির প্রচলন রয়েছে। তবে সব কিছুই নির্ভর করে সময় ও উপলক্ষ্যকে ঘিরে। বর্তমানে মেয়েরা সুতি, খাদি, অ্যান্ডি, সিল্ক, হাফ সিল্ক, কাতান, মসলিন, জামদানি, বেনারসি সব শাড়িই পরছেন। আবার শুধু শাড়ি পরলেই পরিপূর্ণ ফ্যাশন হবে, এমনটাও নয়। শাড়ির রং, ডিজাইন- এসবও দেখার বিষয়। এর সঙ্গে ব্লাউজের কাটিং, চুলের স্টাইল আর গহনারও ভূমিকা রয়েছে। তবেই শাড়ির পরিপূর্ণ ফ্যাশন চোখে পড়বে। আর এসব নির্ভর করে কোথায়, কোন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন তার ওপর।

ডিজাইনার নোশিন তাবাস্সুম বলেন, বিয়ে বা জমকালো অনুষ্ঠানে ভারি নকশার ও গাঢ় রঙের জামদানি, কাতান, বেনারসি যেমন মানানসই, তেমনি সাধারণ অনুষ্ঠানে হালকা রঙের হালকা কাজের শাড়ি বেশ চলে। আবার অনেকে শাড়ি পড়ে অফিসও করেন। তাদের বেলায় হালকা কাজের, হালকা রঙের সুতি বা জামদানি চলনসই। অন্যদিকে বিয়ে বা জমকালো অনুষ্ঠানে শাড়ির সঙ্গে একটু ভারী গহনা যেমন চলবে, তেমনি সাধারণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য শাড়ির সঙ্গে হালকা গহনাই যথেষ্ট।

নানা ধরনের, নানা ডিজাইনের শাড়ি মিলবে বাজারে। আজকাল শাড়িতে চওড়া পাড়ের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে সুতি, জর্জেট, সিল্ক বা কাতান শাড়িতে এটা লক্ষণীয়। সঙ্গে থাকছে সুতার কাজ, অ্যাপ্লিকের হ্যান্ডপ্রিন্ট বা অন্য নকশার কাজ। আবার এক রঙের পাশাপাশি বেশ কটি রঙের মিশেলে কনট্রাস্টের শাড়িও বেশ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া অনেকে হালকা শাড়িতে ভারি নকশার কাজ করেও পরছেন।

এছাড়া সুন্দর শাড়ির সঙ্গে সুন্দর ব্লাউজও দরকার। ফ্যাশন ডিজাইনাররা বলেন, শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের ডিজাইনেও আনতে পারেন বৈচিত্র্য। প্রিন্টের সুতি ব্লাউজ, কন্ট্রাস্ট রঙের ব্লাউজ, থ্রি-কোয়ার্টার, হাফহাতা বা স্লিভলেস ব্লাউজ পরতে পারেন। তবে অবশ্যই শাড়ির সঙ্গে মানানসই হতে হবে। এছাড়া কোন শাড়ি পড়ে কোন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন, তার বিবেচনায়ও ব্লাউজ নির্বাচন করতে হবে। তবে শাড়ির সৌন্দর্য পরিপূর্ণভাবে যেমন ফুটে উঠবে, তেমনি ফ্যাশনটাও হবে পরিপূর্ণ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত