ইতিহাসের প্রথম মাদ্রাসা
হুমাইদুল্লাহ তাকরিম
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

জ্ঞানার্জনের জন্য ইসলামের প্রাথমিক যুগে তেমন কোনো মাদ্রাসা ছিল না। ইসলামের আদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল মসজিদ। এক বর্ণনায় আছে, আদম (আ.) দুনিয়ায় এসে বাইতুল্লাহ বা পবিত্র কাবাঘর নির্মাণ করেন। এটিই মানবজাতির প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) ইসলাম প্রচারের সূচনা থেকেই মানবজাতির মহান শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তিনি ইসলাম শিক্ষার নিয়মনীতি প্রবর্তন করেন। নবুওয়ত লাভের পর কাবাকে প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করেন। তবে তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। পরে তিনি মক্কা নগরীর সাফা পাহাড়ের পাদদেশে সাহাবি আরকাম বিন আবুল আরকামের বাড়িতে ‘দারুল আরকাম’ নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এটাই ইতিহাসের প্রথম মাদ্রাসা হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) এখানে বসেই সবাইকে ইসলামের শিক্ষা দিতেন। এখানেই সবাই মিলে নামাজ আদায় করতেন। দারুল আরকামে প্রধানত কোরআন ও ঈমানের পাঠদান করা হতো, আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ উপস্থিত সাহাবিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হতো। এ ছাড়া তাদের আধ্যাত্মিকতা, চরিত্র, সমাজ, রাজনীতি ও দাওয়াতের কর্মকৌশল শেখানো হতো। নবুওয়তের ষষ্ঠ বছর পর্যন্ত তিন বছর এ দারুল আরকামই ছিল প্রিয়নবী (সা.)-এর অবস্থানস্থল এবং ইসলামের প্রাণকেন্দ্র। এ তিন বছর যারাই ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তাদের আদি পর্যায়ের মুসলমানের মর্যাদা দেওয়া হয়। দারুল আরকামে সর্বশেষ ইসলাম গ্রহণকারী হলেন ওমর (রা.)। কারণ, তার ইসলাম গ্রহণের পর মুসলমানদের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং মুসলমানরা দারুল আরকাম থেকে বেরিয়ে মুক্তাঙ্গনে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া শুরু করেন। (ইসলামের ইতিহাস : ৯৫; আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যা : ৯৯; মুসনাদে হাকিম : ৬১৩০)।
লেখক : প্রাবন্ধিক ও ইতিহাসবিদ
