লোহাগাড়ায় সড়কের বিশাল অংশ খালে বিলীন
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
খোকন সুশীল, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ইসহাক মিয়া সড়কের বিশাল অংশ খালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের জাদী পাহাড় বৌদ্ধ বিহারের গেট সংলগ্ন এলাকায় চান্দা খাল এলাকায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া না হলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। জানা যায়, উপজেলার চুনতি শাহ সাহেব গেট সংলগ্ন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হতে শুরু হয়ে পুটিবিলা ইউনিয়নের এমচরহাট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ইসহাক মিয়া সড়ক। এ সড়ক উপজেলার চুনতি ও পুটিবিলা ইউনিয়নের ১৬টি গ্রাম, ৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অসংখ্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হয়। এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়ন ও জাতীয় অর্থনীতিতে এ সড়কটি ব্যাপক ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। সড়কটি দিয়ে চুনতি ও পুটিবিলা ইউনিয়নের মৌলানা পাড়া, জেতবন বৌদ্ধ বিহার বড়ুয়া পাড়া, সাতের আগা, বড় ঘোনা, পাঠিয়াল পাড়া, নোয়া পাড়া, পুরান পাড়া, মাঝির পাড়া, পানত্রিশা, উত্তর পানত্রিশা, নারিশ্চা, নারিশ্চা বড়ুয়া পাড়া, মাষ্টার পাড়া, কুড়িক্যা পাড়া, কোলার পাড়া, দক্ষিণ হরিণা পাড়া, চুনতি শাহ সাহেব মাজার, জেতবন বৌদ্ধ বিহার, চুনতি লোকনাথ আশ্রম, জাদী পাহাড় বৌদ্ধ বিহার, নারিশ্চা নুরানি মাদ্রাসাসহ অসংখ্য মসজিদ ও চাম্বি রাবারড্যাম প্রকল্পে লোকজন যাতায়াত করেন। এছাড়াও চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসা, চুনতি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চুনতি উচ্চ বিদ্যালয়, চুনতি মেহেরুন্নিছা প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতঘড় নোয়াপাড়া, চান্দা ও নারিশ্চা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই সড়কে যাতায়াত করে থাকেন।
ইসহাক মিয়া সড়ক গ্রামীণ পরিবহন উন্নয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি)’র অধীনে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যায়ে এ সড়কের নির্মাণ কাজ ২০১৫ সনের ৩ সেপ্টেম্বর শুরু ও ২০১৮ সনের ১৫ জুন শেষ হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইসহাক মিয়া সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। তবে জাদী পাহাড় বৌদ্ধ বিহারের গেট এলাকায় চান্দা খালে বিলীন হয়ে গেছে সড়কের বিশাল একটি অংশ।
ভেঙে গেছে গাইড ওয়ালও। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে সড়কের ওই অংশ পুরোটাই বিলীন হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। যার ফলে স্থানীয় লোকজন ও শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। দ্রুত সড়কের ভাঙন অংশ মেরামতের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের দাবি, সড়ক অবকাঠামো রক্ষায় দ্রুত টেকসই গাইডওয়াল নির্মাণ ও জরুরি সংস্কার কাজ শুরু করতে হবে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে চান্দা খালের পাশে সড়ক রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। জনজীবন ও কৃষি অর্থনীতি রক্ষায় এই সড়কের গুরত্ব অপরিসীম। দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা। এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন জানান, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করে, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও কৃষকরা। আশপাশের বিস্তীর্ণ কৃষি জমির উৎপাদিত ফসল বহনের একমাত্র পথ এটি। সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে এলাকার কৃষি অর্থনীতি ধসে পড়বে। স্থানীয় বাসিন্দা গ্রাম পুলিশ বাদশা বলেন, আমরা গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে চুনতি বাজার যাওয়ার সময় সড়কে বিশাল অংশ ভাঙনের কারণে আতঙ্কে থাকি।
দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে এলাকাবাসী বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। লোহাগাড়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী ইফরাত বিন মুনীর জানান, চান্দা খালে ইসহাক মিয়া সড়ক ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে সড়কের ভাঙন সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, ইসহাক মিয়া সড়কের ভাঙনের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এলজিইডির চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আলী বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জেনেছি। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
