হাটহাজারীতে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সুমন দাশ গুপ্ত, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা ৫০ শয্যার হাসপাতালে শীত মৌসুমের শুরুতেই শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। গত তিনদিন ধরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে স্বাভাবিক ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৭০-৮০ জনের মতো শিশু ভর্তি হচ্ছে, যার বেশির ভাগই নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শীতের শুরুতে হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তন, ধুলাবালির পরিমাণ বৃদ্ধি এবং সকালে ঘন কুয়াশার কারণে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে পাঁচ বছরের নিচের শিশুরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায়। শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বিছানা সংকটের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে মেঝেতে রেখে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একসঙ্গে একাধিক শিশুকে একটি বেডে রাখা হচ্ছে। হাসপাতালের সেবিকা ও চিকিৎসকরা নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অভিভাবকদের অভিযোগ, হঠাৎ শিশুদের অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় ফার্মেসি ও ক্লিনিকগুলোতেও রোগীর চাপ দেখা দিয়েছে। অনেকেই সরকারি হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
এদিকে, হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা স্বাভাবিক আছে এবং রোগীর সেবার মান বজায় রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়টি শীতজনিত রোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এই সময়ে শিশুদের স্বাস্থ্যবিধি মানা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো এবং শীত থেকে সুরক্ষা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তাপস কান্তি মজুমদার জানান, গত তিনদিন ধরে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। বেশির ভাগই নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। তবে আমরা অতিরিক্ত ওয়ার্ড খোলার প্রস্তুতি নিয়েছি এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন ও অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শিশুদের ঠান্ডা থেকে রক্ষা করতে গরম কাপড় ব্যবহার করা, ধুলাবালি থেকে দূরে রাখা এবং ঠান্ডা খাবার বা পানীয় থেকে বিরত রাখাই এখন সবচেয়ে জরুরি। সামান্য জ্বর বা কাশি দেখা দিলেও অভিভাবকদের দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার মতে, রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেশি হলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই,তবে সতর্ক থাকা দরকার।
