বোয়ালখালীতে উচ্চ ফলনশীল লাউ চাষে সাফল্য
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বিকাশ নাথ, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম)

৪০ শতক জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের লাউ চাষ করে সফল চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার খিতাপচর এলাকার প্রান্তিক কৃষক মো. সাজ্জাদ হোসেন। কৃষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকে কৃষি কাজে জড়িত। কোনো সময়ে কোনো ধরনের সবজি আবাদ করলে ফলন ভালো হবে এবং বাজারে আগাম সবজি হিসেবে দামও ভালো পাওয়া যাবে সেটা বিবেচনা করে এবার উচ্চ ফলনশীল লাউ বীজ সংগ্রহ করে ৪০ শতক জমিতে লাগিয়েছি। ৩ মাস আগে উপজেলার পশ্চিম খিতাপচর এলাকার দক্ষিণ বিলে এ লাউ চাষে তার খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে মাদা তৈরি, মাচা, সার ও মজুরি রয়েছে।
এখন সাজ্জাদের খেতে প্রচুর লাউ। বাজারজাত করছেন। সপ্তাহে ২ বার লাউ সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রতিটি লাউ পাইকারি ৩০ টাকা এবং খুচরা ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার টাকা মতো বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি। সঠিক পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও ২ মাস ফলন পাওয়া যাবে। আরও ৭০-৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছেন তিনি। খরচ বাদে তার সম্ভাব্য লাভের পরিমাণ ১ লাখ টাকার আশা করছেন তিনি। মাত্র দুই মাসের মধ্যে লাউ চাষে অভাবনীয় ফলন পেয়ে খুশি হয়েছেন তিনি। কম খরচ ও অল্প সময়ে এমন লাভের হিসাব দেখে লাউ চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের।
কৃষক সাজ্জাদ হোসেনের লাউ খেতে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের মাচায় ঝুলছে লম্বা সবুজ রঙের অসংখ্য লাউ। খেতের চারদিকে শুধু লাউ আর লাউ। বাগানের এসব ঝুলন্ত সবুজ কচি লাউ দেখলে যে কারো চোখ জুড়িয়ে যায়। স্থানীয়রা জানান, একজন সফল ধান ও কচু চাষি হিসেবেও কৃষক সাজ্জাদ হোসেনের এলাকায় বেশ সুনাম রয়েছে। তিনি অত্যন্ত পরিশ্রমী মানুষ। এলাকায় বিষমুক্ত সবজি, নানা রকম ফসল ফলিয়ে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাজারেও বিক্রি করে সংসারের খরচ চালান তিনি। সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে কৃষিতে সফলতা অর্জন করা সম্ভব। তবে একটি কালভার্টের অভাবে বিপাকে রয়েছেন ঐ এলাকার অন্তত ৭০-৮০ জন কৃষক। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ‘হাইব্রিড’ একটি উচ্চ ফলনশীন লাউ জাত।
এটি অতি শীত ব্যতীত সারা বছরই চাষ করা যায়। এ জাতের লাউ বীজ বপনের ৪০-৪৫ দিন পর থেকে লাউ সংগ্রহের উপযোগী হয়। এছাড়া প্রচলিত জাতের তুলনায় ২.৫-৩.০ গুণ ফলন বেশি হয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অ. দা.) কৃষিবিদ কল্পনা রহমান জানান, লাউ সাধারণত শীতকালে বেশি চাষ হলেও এখন সারা বছরই লাউ চাষ হয়। ‘নাইস গ্রিণ’ অত্যন্ত একটি ভালো জাত। বাজারে লাউয়ের চাহিদা থাকায় ও ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পেরে লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। যা প্রতি হেক্টরে ২৫-৩০ মে. টন উৎপাদন করা যায়। এ লাউ দেখতে সুন্দর ও তরতাজা, খেতেও সুস্বাদু। এ ছাড়া বাজারে চাহিদা ও ফলন বেশি হওয়ায় এ লাউ চাষে কৃষকের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে।
