ফটিকছড়িতে আমন ধানের বাম্পার ফলন

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এমরান হোসেন, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম)

ফটিকছড়িতে চলতি মৌসুমে আমান ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সোনালি ফলন দেখে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ঝিলিক। সর্বত্র সোনালি নতুন ধানের মৌ মৌ সুগন্ধ বয়েছে। গ্রামে-গঞ্জে নতুন ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ চলছে। ধান মাড়াইয়ের পর শুকানোর জন্য আগে থেকে অধিকাংশ বাড়ির উঠান মাটির কাদার প্রলেপ দিয়েছিল কৃষাণ-কৃষাণিরা। ধান শুকানোর পর গোলায় তোলা হবে। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার হারুয়ালছড়ি ইউপির পাটিয়ালছড়ি বিল, বড়ুয়া পাড়া বিল, ধোপারখীল বিল, সুজানগর বিল, চিনাটিলা দক্ষিণ বিল, কালাজ্যা বিল, ভেরণ্যাপাড়া বিল, দরব পাড়া বিল, মহানগর বিল, পূবের বিল, ফকিরপাড়া বিল, রক্তছড়ি বিল, সিকদার বিল, ফটিকছড়ি ফায়ার স্টেশন সংলগ্ন কেএমটেক বিলে সোনালি ধান আর ধানে যেন বিলগুলো পরিপূর্ণ হয়ে আছে। সেখানে ধান কাটা, কাটা ধানখেত থেকে কৃষকের উঠানে নিয়ে আসা, ধান মাড়াইয়ের কাজ পুরাদমে চলছে। এছাড়া উপজেলার কাঞ্চানগর চমুরহাট বিল, ভূজপুর, সুয়াবিল, ধর্মপুর, রোসাংগিরীর আজিমনগর বিলসহ অন্যান্য বিলগুলোতে ভরা সোনালি ধান আর ধান। একাধিক এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। আবার অনেক বিলে কৃষক নিজে বা কামলা দিয়ে ধান কাটতে দেখা যায়। ভূজপুরের কৃষক মো. ফরিদ ও আবছার, কাঞ্চননগরের কৃষক মাহমুদুল হক এবং আইয়ুব আলী, কেএমটেক বিলের কৃষক মঞ্জু বলেন, আমান ধানর বাম্পার ফলন দেখে মন ভর গেছে। হারুয়ালছড়ি এলাকার কৃষক রেদওয়ান আহমদ বলেন, আমি ছয় বিঘা জমিতে ব্রি ধান-৭৫ জাতের ধান রোপণ করেছিলাম। বিঘা প্রতি ১৬-১৮ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। বাজারে প্রতিমণ ৯৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। আগাম ধান কাটায় এখন জমিতে তিনটি ফসল ফলাতে পারছি।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ফটিকছড়িতে ২২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৭ হাজার মেট্রিক টন। কৃষি কর্মকর্তারা আশা করছেন, অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফলন পাওয়া যাবে। এবার কৃষকরা উফশী জাতের আমান বিআর- ১০, ১১, ২২, ২৫, ব্রি ধান-৩০, ৩১, ৩২, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪৯, ৫১, ৫২, ৫৬, ৭১, ৭২, ৮৭, ৯৩, ৯৫, ৮০, বিনা ধান, ৭, ১১, ২০ এবং পাজাম, স্বর্না, অন্যান্য (দিনাজপুরী, বেনম্বার), চাক্কল, গিউস, বিন্নী, কালিজিরা, বালাম, হাইব্রিড এর চাষ করেছিল। ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেক বলেন, চলতি মৌসুমে আমান ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

কৃষকদের উপজেলা কৃষি অফিস হতে বিনা মূল্যে সার ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ও কৃষি বিভাগের সার্বিক নজরদারি ও পরামর্শের কারণে রোগ ও পোকাণ্ডমাকড়ের আক্রমণ অত্যন্ত কম ছিল। এবার কৃষকরা আগের তুলনায় ব্যাপক লাভবান হবে এমনটি আশা ব্যক্ত করেন তিনি।