খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ততা বেড়েছে গাছিদের
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আবু সাঈদ ভূঁইয়া, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)

দেশজুড়ে পৌষের শীতের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আর শীত এলেই প্রাণ ফিরে পায় গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছগুলো। মিরসরাই উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন দৃশ্যমান গাছিদের বাড়তি ব্যস্ততা। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেজুর গাছ পরিষ্কার, পাতার ঘষামাজা, গাছ ছাঁটাইয়ের কাজ ও কিছু কিছু গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
স্থানীয় গাছিরা জানান, শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ পরিষ্কার করার কাজ শেষ করতে হয়। এরপর গাছের মাথায় নল বসানোর প্রস্তুতি নিতে হয়। আর মাত্র কয়েকদিন পরই শুরু হবে খেজুর রস সংগ্রহ।
তখন ভোরের আলো ফোটার আগেই গাছি উঠে পড়বেন গাছে, নামিয়ে আনবেন ঝরা মিষ্টি রস। স্থানীয় আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, মিরসরাইয়ে শীতের রসের কদর বরাবরই বেশি। ভোরের টাটকা রস যেমন বাজারে বিক্রি হয়, তেমনি অনেক রস দিয়ে তৈরি করা হয় খেজুরের সুস্বাদু গুড়। গ্রামের মাটির তৈরি হাঁড়িতে খেজুর রস সংগ্রহ কুয়াশা ভেজা ভোরে রস আনতে যাওয়া এক অন্যরকম অনুভূতি। তবে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠার ফলে উপকূলীয় বন যেমন ধ্বংস হয়েছে ঠিক তেমনি খেজুর গাছও ধ্বংস হয়েছে। এদিকে মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট, শান্তিরহাট, জোরারগঞ্জ, মিঠাছড়া, সুফিয়া বাজার, আবুতোরাব, সাহেরখালী, ওয়াহেদপুর, বড়তাকিয়া বাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় শীত জুড়ে খেজুর রস ও গুড়ের চাহিদা থাকে তুলনামূলক বেশি। ব্যবসায়ীরা জানান, মৌসুমের শুরুতে রসের দাম একটু বেশি থাকলেও শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরবরাহ বাড়ে এবং বাজারও জমে ওঠে।
উপজেলার উপকূলীয় এলাকার গাছি নুর করিম জানান, প্রতি বছর শীত এলেই আমাদের কাজের চাপ বাড়ে। এরইমধ্যে গাছ পরিষ্কার শেষে এখন রসের অপেক্ষা। আর দু’চার দিনের মধ্যেই রস সংগ্রহ শুরু হবে। এরপর ভোরবেলা রস নামানো, আবার ভোরেই বাজারে বিক্রি এভাবেই চলে পুরে মৌসুম। কেউ কেউ গাছতলা থেকে রস কিনতে আসেন।
শীত যত এগোবে, মিরসরাইয়ের চরাঞ্চল থেকে পাহাড়ি গ্রাম সবখানেই ছড়িয়ে পড়বে খেজুর রসের মিষ্টি সুবাস। আর গাছিদের ব্যস্ততা থাকবে পুরো মৌসুম জুড়ে। শীত মৌসুমে উপজেলার বহু পরিবারের মৌসুমি আয় হয় এই খেজুর গাছকে কেন্দ্র করে।
এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এখনো পুরোপুরি রস সংগ্রহ শুরু হয়নি। পুরোদমে শীত আসলে রস সংগ্রহ করবেন এখানকার গাছিরা। তিনি আরো বলেন, মিরসরাইয়ে শীতের মৌসুমে প্রায় দুই কোটি টাকার রস বিক্রি হয়ে থাকে।
