খনিয়া দিঘি মসজিদ

মোস্তফা কামাল গাজী

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

খনিয়া দিঘি মসজিদ- চাপাইনবয়াবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় এর অবস্থান। নির্মিত হয়েছে বহু আগে। প্রায় পনের শতকের দিকে। তখন গৌড় ছিল বাংলার রাজধানী। রাজবিবি নামের কেউ মসজিদটি নির্মাণ করেছেন বলে লোকমুখে শোনা যায়। এতদিন পরেও সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি।

মসজিদের আশপাশটা ঘন গাছগাছালিতে ঘেরা। প্রবেশপথে কোনো গেইট নেই। মাঠভর্তি ঘন দূর্বাঘাস। দূর থেকেই দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে লাল পোড়ামাটির মসজিদটি। দেয়ালজুড়ে কারুকার্য শোভিত পোড়ামাটির ফলক। দেখে যে কেউ বুঝতে পারবে, এগুলো মোঘল আমলের অনন্য কীর্তি। ছাদের ওপর সামনের অংশে তিনটি ছোট গম্বুজ এবং মাঝখানে একটি বড় গম্বুজ। গম্বুজগুলো মসজিদের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ। চারপাশে মিনারের মতো স্থাপনা থাকলেও আসলে কোনো মিনার নেই। দেয়ালগুলো এতটাই পুরো যে, চৈত্র-বৈশাখেও ভেতরটা থাকে সম্পূর্ণ শীতল। দেয়ালের গায়ে শ্যাওলা জমে খসে পড়েছে কিছু অংশ। পুরোটা দেয়ালেই বিচিত্র কারুকার্যের ছাপ। মসজিদের সামনের অংশে অজুখানা আর বাথরুম। একপাশে ৬০ বিঘা জমিজুড়ে বিশাল খনিয়া দিঘি। এই দিঘির নামানুসারেই মসজিদের নাম রাখা হয়েছে। দিঘির পাড়ে মুসল্লিদের অজু করার জন্য বানানো হয়েছে শান বাঁধানো ঘাট। বিশাল দিঘির পাড়ে এমন সুন্দর একটা স্থাপত্য খুব মানিয়েছে। দর্শনার্থীরাও উপভোগ করেন মন ভরে। মসজিদে প্রবেশের দরজা খুব বেশি প্রশস্ত নয়। বেশ চিপানো।

ভেতরটা ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন। রয়েছে মিহরাব ও মিম্বার। দেয়ালে ছোট ছোট গর্ত করা রয়েছিল কুপি বা প্রদীপ রাখার জন্য। মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে ইট, টেরাকোটা ও টাইল।

মসজিদের আয়তন ৬২৪২ ফুট। মূল গম্বুজটির নিচের ইমারত বর্গাকারে তৈরি; যার প্রত্যেকটি ২৮ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট। সামনের দিকে পূর্ব পাশে একটি বারান্দা ছিল, যার অবশিষ্টাংশ এখনও দেখা যায়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায়ই ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা।