ঢাকা ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ওষুধ ও জনবল সংকটে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ওষুধ ও জনবল সংকটে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল) জনবল সংকটে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। আউটডোর, ইনডোরসহ জরুরি বিভাগে ৫ জন চিকিৎসক, হিমশিম খাচ্ছে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শয্যার একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ৩১ জন চিকিৎসকের মধ্যে বাস্তবে মাত্র ৫ জন দিয়ে চলছে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি। গর্ভবর্তী মায়েদের নরমাল ডেলিভারি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও ওষুধ ও জনবলে ঘাটতি। বৃহৎ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে নানা রোগে আক্রান্ত রোগীরা সেবা নিতে আসে হাসপাতালে। উপজেলায় কমিউনিটি ক্লিনিক ৩৫টি থাকলেও প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ জন রোগী সেবা নিতে আসে। জরুরি বিভাগে প্রতিদিন ২০ থেকে ৫০ জন রোগী আসে, ভর্তি থাকে প্রায় ৫০ থেকে ১০০ জন রোগী। সরকারি বাজেট অনুযায়ী ৩০ প্রকার ওষুধ দেয়। জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা হলেও আধুনিকমানের চিকিৎসা দেয়া চেষ্টা করছেন ৫ জন চিকিৎসক। দেশের প্রতিটি মানুষকে সঠিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। মানুষের মৌলিক অধিকারের মধ্যে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ৪ লাখ জনবহুল, ৪১৩ বর্গকিলোমিটার আয়তন, ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বীরগঞ্জ উপজেলা। উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, প্রেসার ও অ্যাজমাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন রোগের ওষুধের তীব্রসংকট দেখা দিয়েছে।

চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। অপারেশন রোগী মাদ্রাসা ছাত্র নুর আলম বলেন, আমি ৭ দিন থেকে ভর্তি আছি, বিনামূল্যে অপারেশন করেছে। অনেক ওষুধ দিয়েছে, কিছু কিনেছি। শতগ্রামের ফরিদপুর এলাকার নুরজাহান (৫৯) রোগী বলেন, বিনামূল্যে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে এবং ভাতসহ নাস্তার মান অনেক ভালো। তবে বেশিরভাগ ওষুধ কিনতে হচ্ছে। ভুক্তভোগী রোগীরা বলেন, এ হাসপাতালে একজন চিকিৎসক একজন চিকিৎসক দিনে একশ’ থেকে দেড়শ’ রোগী দেখেন। তবে ৩০ থেকে ৪০ জনের বেশি রোগী দেখা উচিত নয়। এভাবে একটি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলতে পারে না। হাসপাতাল থেকে কিছু ওষুধ দিয়ে হাতে স্লিপ ধরিয়ে দেন। বাকি ওষুধগুলো বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের লম্বা লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট মেডিকেল অফিসার কর্তৃক জানা যায়, চিকিৎসক সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। তাদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত গুটিকয়েক চিকিৎসক। তার পরেও রোগীদেরসেবা দিয়ে যাচ্ছি। বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মোহাম্দ মহসীন বলেন, কম সংখ্যক জনবল দিয়ে জনবহুল অঞ্চলকে সেবা প্রদানে অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। সরবরাহে ঘাটতির কারণে ওষুধের বিষয়ে মাঝেমধ্যে কিছু জটিলতা হয়। হাসপাতালে যে ওষুধ সরবরাহ থাকে না, সেই ওষুধ দোকান থেকে নিয়ে আসতে বলা হয় রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের। সরকারি বাজেট অনুযায়ী এ অঞ্চলের মানুষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই বাজেট বাড়ার দরকার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত