কৃষকের সবজি বিক্রিতে পথে পথে বাধা

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জে কৃষকের উৎপাদিত শীতকালীন শাকসবজি বিক্রিতে পথে পথে বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব কৃষিপণ্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মালিকানাধীন আড়ত ছাড়া অন্য কোথাও বিক্রির কথা শুনলেই এ বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সাটুরিয়া উপজেলার কামতা গোলড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক ও গোলড়া কামতা বহুমুখী কাঁচামালের আড়তের পক্ষ থেকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দাখিল করেছেন।

অভিযোগ ও সরেজমিন জানা গেছে, সাটুরিয়া ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় উৎপাদিত মৌসুমী শাকসবজিসহ বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল রাজধানীতে সহজলভ্যে পৌঁছে দেয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের গোলড়া এলাকায় একটি আড়ত প্রতিষ্ঠা করে স্থানীয় কৃষকরা।

সাটুরিয়া থানার ধানকোড়া ইউনিয়নের গোলড়া পেট্রোল পাম্পের উত্তর পাশে স্থাপিত এই কাঁচা ও পাকা মালের আড়ত থেকে রাজধানীর কাওরান বাজার, শ্যামবাজার, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, সাভার, আশুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে এই টাটকা শাকসবজি সরবরাহ হয়ে থাকে। একটি চক্র চাষিদের উৎপাদিত সবজি বহন করা যানবাহন আটকে দিয়ে হয়রানি করছে। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দোসররা এই অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সাটুরিয়া উপজেলার চামারখাই গ্রামের সবজি চাষী শামসুল হক সামু জানান, আমার জমিতে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি নিয়ে প্রতিদিনের ন্যায় কামতাণ্ডগোলড়া বহুমুখী আড়তে নিয়ে আসছিলাম। গোলড়া হাইওয়ে থানার সামনে পৌঁছার পর কতিপয় ব্যক্তি আমার শাকসবজি ভর্তি ভ্যান গাড়িটি আটকে দেয়। তারা মালামাল নিয়ে গোলড়া আড়তের পরিবর্তে সাবেক মন্ত্রী জাহিদ মালেকের মালিকানাধীন জমিতে তৈরি আড়তে নিতে বলেন। আমি মন্ত্রীর

আড়তে যেতে অস্বীকার করায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখে। দুই ঘণ্টা পর আড়তে এসে দেখি পাইকাররা (পাইকারি ক্রেতা) চলে গেছে। আমার পণ্য আমি বিক্রি করতে পারিনি। গোপালপুর এলাকার সবজি চাষি আব্দুল্লাহ আল-সাকি জানান, প্রতিদিন তারা আমাদের পথে পথে আটকে দিচ্ছে। সময়মতো আড়তে আসতে না পারায় আমাদের শাকসবজি বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে কৃষকরা যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাটুরিয়া মানিকগঞ্জ অঞ্চলের শীতকালীন সবজি চাষিরা।

গোলড়া বহুমুখী আড়তের অন্যতম উদ্যোক্তা শরিফুল হক রতন বলেন, ঢাকার খুবই কাছে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য এই আড়ত থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি আড়তে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু পতিত সরকারের দোসররা আমাদের আড়তে সবজি নিয়ে কৃষকদের প্রতিদিন হুমকিধমকি দিয়ে মালামাল ভর্তি যানবাহন আটকে দিচ্ছে। বলপ্রয়োগ করে তারা মন্ত্রীর আড়তে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দেশ ছেড়ে পালানোর পর তার দোসর ধানকোড়া ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম জুয়েল, ধানকোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মো. লিয়াকত হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় বিএনপি নেতা আবুল বাশার, আব্দুল লতিফ ও শাকিল ড্রাইভারসহ কতিপয় দুর্বৃত্ত প্রতিনিয়ত এই অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে। বিষয়টি এরইমধ্যে পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।