ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কুপি বাতি এখন শুধুই স্মৃতি

কুপি বাতি এখন শুধুই স্মৃতি

কালেরবিবর্তনে ডিজিটাল আধুনিকতার সংস্পর্শে আহবহমান গ্রামবাংলার এক সময়ের জনপ্রিয় কুপি বাতি হারিয়ে যেতে বসেছে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত বৈদ্যুতিক আলোতে আলোকিত হওয়ায় এ কুপি বাতি এখন শুধুই স্মৃতি। এক সময় গ্রামীণ জীবনে অন্ধকার দূর করার একমাত্র অবলম্বন ছিল কুপি বাতি। কুপি বাতি জ্বালিয়ে রাতে গৃহস্থালির কাজ করতো গৃহিণীরা, রাস্তায় চলাচলসহ উঠানে কিংবা বারান্দায় অথবা ঘরে পড়াশোনা করত ছেলে মেয়েরা। কুপি বাতির কেরোসিন তেল আনার জন্য প্রতিটি বাড়িতেই ছিল বিশেষ ধরনের কাচের ও প্লাস্টিকের বোতল। সেই বোতলের গলায় রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হতো বাঁশের খুটিতে। আধুনিক প্রযুক্তির কারণে আবহমান গ্রামবাংলার কুপি বাতি যেন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলা থেকে। এক সময় আবহমান গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এই কুপি বাতি আলো দিত।

গ্রামবাংলার সেই চিরচেনা প্রয়োজনীয় কুপি বাতি আজ বিলীন হয়ে গেছে বললেই চলে। এ দৃশ্য এখন আর গ্রামীণ সমাজে চোখে পড়ে না। কালের বির্বতনে বর্তমানে কুপি বাতির পরিবর্তে স্থান করে নিয়েছে বৈদ্যুতিক বাল্ব, সোলার প্লান্ট, চার্জার লাইট, চার্জার, চার্জার ল্যাম্পসহ আরো অনেক কিছুই। এ কুপি বাতিগুলো ছিল বিভিন্ন ডিজাইনের ও বিভিন্ন রঙের। এগুলো তৈরি হত কাঁচ, মাটি, লোহা আর পিতল দিয়ে। গ্রামবাংলার মানুষ নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী কুপি বাতি ব্যবহার করতেন। বাজারে সাধারণত দুই ধরনের কুপি পাওয়া যেত। বেশি আলোর প্রযোজনে কুপি বাতিগুলো কাঠ এবং মাটির তৈরি গাছা অথবা স্টান্ডের ওপর রাখা হত।

এই গাছা অথবা স্টান্ডগুলো ছিল বিভিন্ন ডিজাইনের। বর্তমানে গ্রামে বিদ্যুতের ছোঁয়ায় কুপি বাতির কদর যেন হারিয়ে গেছে। গ্রামীণ সমাজের সন্ধ্যা বাতি ‘কুপি বাতি’ এখন সোনালী অতীত স্মৃতিতে পরিণত হয়ে গেছে। কিন্তু এখন বিদ্যুৎ না থাকলেও গ্রামবাংলার মানুষ ব্যবহার করছে সৌর বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন রকমের চার্জার। গ্রাম বাংলার আপামর লোকের কাছে কুপি বাতির কদর কমে গেলেও এখনও অনেকে স্মতি হিসেবে আগলে রেখেছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে নতুন প্রজন্মের কাছে অপরিচিত এই কুপি বাতি।

রাজাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা আমেনা বেগম (৭৫) জানান, আগে আমরা এই কুপি বাতি দিয়ে রাতের বেলা রান্না বান্না করেছি, ছেলেমেয়েরা কুপি বাতির আলোয় পড়াশোনা করেছে, কিন্তু এই আধুনিক যুগে অনেকে কুপি বাতি সম্পর্কে অবগত নয়। লালমোহনের চরভূতার মায়াজান বিবি (৮৫) বলেন, আমাদের সময় রাতের বেলা এক মাত্র ভরসা ছিলো কুপি বাতি। সন্ধ্যা হলে আমরা ঘরে কুপি বাতি ধরতাম, রাতের সকল কাজ কুপি বাতি দিয়ে করতাম। এক ঘর থেকে অন্য ঘরে কুপি বাতি নিয়ে যেতাম। এখন বৈদ্যুতিক আলোয় আলোকিত হওয়ায় এক সময়ের রাতের প্রয়োজনীয় কুপি বাতি আগামী প্রজন্ম কুপির চেহেরাই ভুলে যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত