কেশবপুরে বোরো আবাদের ব্যস্ততা

প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  উপজেলা প্রতিনিধি

শীত আর কুয়াশাকে উপেক্ষা করেই আমনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যশোরের কেশবপুরের চাষিরা জমি তৈরি করে তাতে বোরো ধানের চারা রোপণ করতে শুরু করেছেন। তবে উপজেলার পূর্বাঞ্চলে যখন চলছে বিলের পানি নিষ্কাশন, তখন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষকরা বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে জলাবদ্ধতার কারণে ২৭ বিলের আওতায় ১৫ হাজার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষকদের আশা আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার তারা বাম্পার ফলন পাবেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে কেশবপুরে ১৪ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বীজতলা তৈরি করা হয়েছে ৬৯২ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, ৮ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ধানের আবাদের আশা করা হবে। ধান আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করতে সরকারিভাবে ৩ হাজার জনকে ২ কেজি করে হাইব্রিড বীজ ধান ও কৃষক পর্যায়ে প্লট প্রদর্শনীর মাধ্যমে উন্নত জাতের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ প্রকল্পের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবছর বৃষ্টিপাত বেশি হয়েছে। কিন্তু নদী, খাল খনন না হওয়ায় পূর্বাঞ্চলের পাঁজিয়া, সুফলাকাটি ও গৌরীঘোনা ও দক্ষিণাঞ্চেলের বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের অধিকাংশ বিল জলাবদ্ধ। এ সব এলাকায় সেচপাম্প দিয়ে বিলের পানি নিষ্কাশন চলছে।

যে কারণে বোরো আবাদ বিলম্ব হবে। উঁচু এলাকার কৃষকরা বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জলাবদ্ধতার কারণে কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলার মধ্যে অবস্থিত ২৭ বিলের সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের আশা ছেড়ে দেয়া হয়েছে। মজিদপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদ জানান, গত আমন মৌসুমে চার বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছিলাম। জুলাই-আগস্টের ভারী বর্ষায় বেজিকড়, খদ্দেরকুড় ও বিনাকুড় বিল তলিয়ে যায়। বিলের ধান নষ্ট হয়ে যায় বলে কোনো আমন ধান ঘরে ওঠেনি। তাই আমনের ক্ষতি পোষাতে শীত আর কুয়াশাকে উপেক্ষা করেই বোরো ধান চাষ শুরু করেছি।

মঙ্গলকোট গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, আমন মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ধান তলিয়ে গেলেও ১০/১২ দিন পর পানি নেমে যায়। কিছু ধান বেঁচে ছিল।

তাতে ৭ মণ ধান পেয়েছি। এই ধান দিয়ে আমার পরিবারে ৪ মাসও হবে না। তাই ঋণ দেনা হয়েও বোরো আবাদে ঝুঁকে পড়েছি। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন বলেন, তার ব্লকের শ্রীরামপুর, বায়সা, মজিদপুর, দেউলী এলাকার উঁচু জমিতে বোরো আবাদ শুরু হয়েছে। নিচু এলাকার বিলের পানি নিষ্কাশন চলছে। সেচ সম্ভব হলে সব বিলে ধান উৎপাদন হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে ২৭ বিল এলাকার কেশবপুর অংশের ১৫ হাজার বিঘা জমিতে ধান আবাদের আশা ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের বিলের পানি নিষ্কাশনে ৬ থেকে ৭ স্থানে সেচ কার্যক্রম চলছে। জানুয়ারির শেষের দিকে জানা যাবে কি পরিমান জমিতে ধানের আবাদ হবে। আমনের ক্ষতি পোষাতে এবার বোরো আবাদে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।